বেতন বন্ধ: রংমিস্ত্রি হলেন শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

বেতন বন্ধ: রংমিস্ত্রি হলেন শিক্ষক

দিনাজপুর প্রতিনিধি |

করোনার কারণে গত ৬ মাস ধরে অন্যান্য স্কুলের পাশাপাশি বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন স্কুলও বন্ধ। আর এই বন্ধের কারণে অনেক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বেতন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। যারা এই স্কুলের বেতনের উপর নির্ভরশীল ছিলেন, তারা পড়েছেন বিপাকে। এরই মধ্যে অনেকে চাকরি ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। আবার অনেকে নিদারুন কষ্টে দিন পার করছেন। বেতন বন্ধের পর জীবন বাচাঁতে এক শিক্ষক এখন রংমিস্ত্রির কাজ করেন।

দিনাজপুরের বিরামপুরের মুকুন্দপুর মডেল কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করে সংসার চালাচ্ছিলেন জাহেদুল ইসলাম। স্বল্প আয়ে সন্তানদের নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। স্কুলের বেতনের পাশাপাশি সংসারের ব্যয় মেটাতে অতিরিক্ত সময় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে চলত তার সংসার। কিন্তু করোনার কারণে গত ৬ মাস ধরে স্কুলের বেতন বন্ধ। নেই সরকারি সহায়তা। এতে কষ্টে কাটছে তার জীবন। বর্তমানে তিনি রংমিস্ত্রীর কাজ করেন।

বিরামপুর কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন জানায়, বিরামপুর উপজেলায় ৪৫টি কিন্ডারগার্টেনে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে। স্কুলগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারি রয়েছেন ৪৫০জন। তারা সবাই বিপাকে পড়েছেন। 

কিছু স্কুলে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের পদাচরণ না থাকায় বিদ্যালয় মাঠে ঘাসগুলো বেশ বড় হয়েছে। অনেক বিদ্যালয়ে ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এক শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম বলেন, স্কুলের বেতন আর শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ে সংসার চলত। কিন্তু গত ছয়মাস বেতন বন্ধ, বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে সংসার চালিয়েছি। মাঝে মাঝে মানুষের জমিতে ধান রোপনের কাজও করেছি। এখন ধার চাইতেও লজ্জা লাগে। দোকানেও অনেক বাকি পড়ায় দোকান মালিকও কথা শোনায়। তিনি বলেন, সংসারে কষ্ট ছিল। কিন্তু এমন সমস্যায় পড়তে হবে ভাবতেও পারিনি। তাই বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে রংমিস্ত্রীর কাজ করছি।

মঞ্জুরুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষক জানান, কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পড়াশোনার পর মেধাবিকাশ স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চলাতেন। এখন অভিভাবকরা করোনার ভয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন না। কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। 

শিক্ষকরা বলছেন, আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত  সরকারি নির্দেশনা থাকায় বিদ্যালয়গুলো খোলা সম্ভব হচ্ছে না। এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। বিদ্যালয়গুলোর বন্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে এই কষ্ট দিগুণ হবে।

রোজগার্ডেন স্কুলের পরিচালক মো. আমিনুর রহমান বলেন, ওই বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক রয়েছেন ১৩ জন। তাদের মাসিক বেতন পরিশোধ করতে ৪৯ হাজার টাকা দরকার হয়। শিক্ষকদের গত মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু অভিভাবকরা মাসিক বেতন বন্ধ করায় আর শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।

বিরামপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.মাহাবুর রহমান বলেন, মার্চ মাস থেকে দেশের সকল কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় অভিভাবকদের কাছ থেকে বেতন আদায় করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বিদ্যালয়গুলো ঘরভাড়া নিয়মিত পরিশোধ করতে হচ্ছে। সরকারি সহায়তা না পেলে শিক্ষকদের হাহাকার আরও বাড়বে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034248828887939