বেত্রাঘাতে চোখ গেল - দৈনিকশিক্ষা

বেত্রাঘাতে চোখ গেল

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সময় ও যুগের চাহিদার প্রেক্ষাপটে বিশ্বের এবং বাংলাদেশেরও অনেক কিছু পাল্টে গেলেও একশ্রেণির শিক্ষকের স্বভাবচরিত্রের বদল হলো না অদ্যাবধি। এবার শিক্ষকের ছুড়ে দেয়া বেতের আঘাতে একটি চোখ হারাল এক ছাত্রী। হবিগঞ্জের যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী হাবিবা আক্তারকে শ্রেণিকক্ষে কথা বলার অজুহাতে বেত্রাঘাতে গুরুতর জখম করে তার চোখ। ছাত্রীটিকে প্রথমে স্থানীয় আধুনিক সদর হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। চোখটি শেষ পর্যন্ত অপারেশন করে তুলে ফেলতে হয়েছে। চোখে বেত দিয়ে আঘাতের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে শিক্ষককে। গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। তারপরই যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। তবে শিশুটি যে শৈশবেই একটি চোখ হারাল স্থায়ীভাবে, তার প্রতিকার কী? অভিভাবক ও স্বজনদেরই বা কী সান্ত্বনা! রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

মা-বাবার অপত্য স্নেহছায়ার পরেই শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বাধিক নিরাপদ আশ্রয়স্থল হচ্ছে শিক্ষাঙ্গন, তা সে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত, যাই হোক না কেন? দুঃখজনক হলো, সেই শিক্ষাঙ্গনই যেন দিন দিন অনিরাপদ ও অপবিত্র হয়ে উঠছে শিক্ষক নামধারী একশ্রেণির লম্পট ও চরিত্রহীন শিক্ষক কর্তৃক। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়ায় অক্সফোর্ড হাই স্কুলের গণিতের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্তত ২০ শিশু শিক্ষার্থীকে ব্ল্যাকমেল করে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাদ যায়নি শিক্ষার্থীর মায়েরাও। তাকে সহায়তার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রধান শিক্ষককেও। প্রমাণ হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছে ধারণকৃত ছবিসহ সেলফোন ও ল্যাপটপ। এলাকাবাসী ক্ষোভ-বিক্ষোভে ধৃতদের বিচার এবং স্কুলটি বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছে। মামলা দায়েরসহ রিমান্ডে নেয়ার খবরও আছে। অন্যদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক ও আপত্তিকর সম্পর্ক স্থাপনসহ ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি মারধর, চড়থাপ্পড়, বেত্রাঘাত তো আছেই, যা আইনে নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয়। সম্প্রতি ফেনীর সোনাগাজী দাখিল মাদরাসার অধ্যক্ষ কর্তৃক অনৈতিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় নুসরাতকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনা তো রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সারাদেশে।

শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের সংখ্যা এবং ব্যাপ্তি বাড়ছে দিন দিন। প্রতিমাসে গড়ে ৫৫ শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ২৬৯টি বেসরকারি সংস্থার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই পরিসংখ্যান। চলতি বছরের প্রথম কয়েক মাসে ১৭৬ শিশু শিকার হয়েছে ধর্ষণের। এর মধ্যে হত্যা করা হয়েছে ২৫ শিশুকে। গত বছর ধর্ষণের শিকার হয়েছিল ১৪৫ শিশু। কেন এসব হচ্ছে, তা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট মহলে। এর আপাত কারণ হতে পারে দুর্বল চার্জশিট, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, সর্বোপরি বিচারহীনতার সংস্কৃতি।

নারীর ক্ষমতায়নসহ অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়নে বাংলাদেশের নারী সমাজ বিশ্বে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে আছে এদিক থেকে। অবশ্য শিশু ও নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ইত্যাদি প্রতিরোধে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্নসহ দেশে যথেষ্ট ভালো আইন রয়েছে। তবে দুঃখের সঙ্গে স্বীকার করতে হয় যে, বিস্তৃত পরিসরে এর প্রয়োগ প্রায় নেই বললেই চলে। অবশ্য এর জন্য নিম্ন আদালতসহ থানা-পুলিশও কম দায়ী নয় কোনো অংশে। সেখানে ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ আছে বিস্তর। বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অভিগম্যতাও সীমিত। সরকার ও আদালত সে ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও দোষী শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে আন্তরিক ও সচেষ্ট হবে বলেই প্রত্যাশা। যে কোনো মূল্যে দেশের শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ ও নিষ্কলুষ করে তুলতে হবে শিক্ষার্থীদের জন্য।

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070621967315674