বেসরকারি শিক্ষকদের সার্বক্ষণিক রাজনীতি বন্ধের নির্দেশ আসছে - দৈনিকশিক্ষা

বেসরকারি শিক্ষকদের সার্বক্ষণিক রাজনীতি বন্ধের নির্দেশ আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বড় বড় রাজনৈতিক দলের পদ-পদবীতে থাকায় বেসরকারি শিক্ষকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানে মনোযোগী হচ্ছেন না। প্রতিষ্ঠান পরিচালনায়ও সময় দিতে পারছেন না। ফলে পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। চাকরিবিধির দূর্বলতার সুযোগে সার্বক্ষণিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকালেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। এমন প্রেক্ষাপটে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পথ বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নীতিমালা করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী পরিষদের এমন উদ্যোগে সমর্থন রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

সরকারের বিভিন্ন সংস্থার একাধিক প্রতিবেদন ও শিক্ষকদের অধিক মাত্রায় রাজনীতি ও বিভিন্ন ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দৈনিকশিক্ষাকে জানিয়েছে।

জানা যায়, শিক্ষকরা সার্বক্ষণিক রাজনীতি, ব্যবসাসহ বিভিন্ন লাভজনক কাজে সম্পৃক্ত। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তিগত কাজে বেশি সময় দেন। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনেও এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বেসরকারি শিক্ষকদের  সরাসরি রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে। গত ২৯শে মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের চাকরি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো বিধি-বিধান না থাকায় তারা অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হওয়ায় সার্বক্ষণিক রাজনীতি করেন। ফলে তারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ততটা আগ্রহী হন না।  মাঠ পর্যায়ে এসব শিক্ষকের চাকরি নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সময় দুরূহ হয়ে পড়ে।  অভিযোগসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গত ফেব্রুয়ারি মাসের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন মিলেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসার পর গত ৩০শে এপ্রিল বেসরকারি শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে বলেছে।  দৈনিকশিক্ষার হাতে থাকা চিঠিটি দেখুন:  

একাধিক সংস্থার প্রতিবেদন ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অর্ধশতাধিক শিক্ষক মনোনয়নের দৌড়ে নেমেছেন। জনমত গড়ে তুলতে স্কুল-কলেজে পড়ানো বাদ দিয়ে তারা নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে রাজধানীতে ছুটে যাচ্ছেন দলের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের কাছে। এছাড়া এমপিওভুক্তসহ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিক্ষক সরাসরি রাজনীতিক দলের পদে রয়েছেন। শিক্ষকতা মহান পেশা হলেও পাঠদানে তাদের মনোযোগ নেই। অনেক শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সে দলের শিক্ষক নেতারা এলাকার সালিশ মীমাংসা নিয়ন্ত্রণ করেন। বাজার কমিটি, অটোরিকশা সমিতিসহ বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত সংগঠনে তারা যুক্ত হয়ে সুবিধা নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সাধারণ শিক্ষকরা দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, দুর্নীতিবাজ অধ্যাক্ষ ও প্রধান শিক্ষকরা সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত থাকার ফলে তাদের কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেন না সাধারণ শিক্ষকরা। এমনকি স্থানীয় প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে দশবার চিন্তাভাবনা করে। রাজনৈতিক দলের পদ-পদবী থাকায় ক্ষমতাবানদের সঙ্গে ওঠাবসা থাকে। ফলে, তারা শ্রেণিকক্ষে অথবা প্রতিষ্ঠানে সময় দেন না।  

রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা - dainik shiksha রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ - dainik shiksha ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ - dainik shiksha উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ - dainik shiksha আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043399333953857