শিক্ষার মূল হচ্ছে ভাল মানের শিক্ষক। একজন শিক্ষক হচ্ছেন একজন সুদক্ষ কারিগর, একজন পথপ্রদর্শক। একজন শিক্ষকই ছাত্রছাত্রীর মূল হাতিয়ার। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবরের পর হাতেগোনা কয়েক হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। এতে প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়েছে ছাত্রছাত্রী। কিন্তু ছাত্রছাত্রীর তুলনায় শিক্ষক কম। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় ক্লাশে ছাত্রছাত্রী গাদাগাদি করে বসে পড়াশোনা করে। কেননা অতিরিক্ত শিক্ষক নেই।
দেশে প্রায় ছয় লক্ষাধিক শিক্ষক নিবন্ধনধারী রয়েছেন। অনেকের একাধিক সনদ রয়েছে। সঠিক হিসাব কষলে নিবন্ধনধারী দেড় লাখের বেশি হবে না। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করা হলে সকল নিবন্ধনধারীর নিয়োগ দেওয়া সম্ভব। অথচ এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের শূন্যপদের চাহিদার বিজ্ঞপ্তি লক্ষাধিক নিবন্ধনধারীদের হতাশ করেছে। নীতিমালা হলো অথচ কার্যকর করা হবে না। এটা কেমন প্রহসন?
শিক্ষকদের শূন্যপদের চাহিদা চেয়ে গত আগস্ট মাসের ২৬ তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। দুইবার সময় বৃদ্ধি করা হয়। এরই মধ্যে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান আজহার উদ্দিন ওএসডি হয়েছেন। নতুন চেয়ারম্যান এসেছেন। নতুন চেয়ারম্যানের কাছে নিবন্ধনধারীদের অনেক প্রত্যাশা তারা যেন দ্রুত নিয়োগ পায়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ছিল শূন্যপদ প্রদানের শেষ সময়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানগণ আন্তরিকতার সাথে শূন্যপদ প্রদান করেছেন। যারা করেননি তারা পরবর্তীতে নিজের ভুল ঠিকই বুঝবেন; কিন্তু তখন অনুশোচনা করেও লাভ হবে না। শিক্ষকনিবন্ধনধারী অনেকেই শূন্যপদ সঠিকভাবে পূরণের জন্য প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের বিনীতভাবে অনুরোধ করেছেন। এজন্য নিবন্ধনধারীদের অন্তর থেকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এভাবে কাজ করলে সফলতা আসবেই। নিবন্ধনধারীরা চাতক পাখির মত চেয়ে আছে নিয়োগের আশায়। কবে আসবে সেই দিন?
এখন দেখা যাক নতুন চেয়ারম্যান তার গুরুদায়িত্ব কতটুকু পালন করতে পারে। যেহেতু শূন্যপদ নেওয়া শেষ, তাই এনটিআরসিএ দ্রুত শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করে শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনবে, এটাই নিবন্ধনধারীদের প্রত্যাশা।
লেখক : সহকারী শিক্ষক, মমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধনবাড়ী, টাঙ্গা্ইল।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]