যুক্তরাজ্য থেকে ব্যারিস্টারি পাসের পর ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন ব্যারিস্টার রফিক। সেদিনের পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টই আজকের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
এরইমধ্যে কেটে গেছে ৫৫টি বছর। মৃত্যুর পর শেষবারের মতো এই দীর্ঘ সময়ের পুরনো কর্মস্থলে ফিরেছেন ব্যারিস্টার রফিক। আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) বাদ আসর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জানাজা শেষে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মস্থলটিতে। সেখানে তাঁর তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সুপ্রিম কোর্টর আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী। জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয়েছে বনানী কবরস্থানে। সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন এই প্রখ্যাত আইনজীবী।
এর আগে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ব্যারিস্টার রফিকের। সেখানে জানাজা পড়ান আদ-দ্বীন হাসপাতাল জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ সাইদুল ইসলাম। জানাজা শেষে পল্টনে অবস্থিত নিজ বাসায় নেওয়া হয় এ আইনজীবীর মরদেহ।
সূত্র জানায়, পল্টনের বাড়িতে বেশ কিছুক্ষণ রাখা হয় ব্যারিস্টার রফিকের মরদেহ। এর পর দ্বিতীয় জানাজার জন্য নেওয়া হয় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে।
আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।
দেশের প্রথিতযশা আইনজীবী এবং আদ-দ্বীন হাসপাতালের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার রফিক-উল হক অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কিছুটা সুস্থবোধ করলে গত ১৭ অক্টোবর সকালে পল্টনের বাসায় ফিরে যান তিনি। তবে ওই দিনই দুপুরের পর তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ১৮ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টার পর তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ১৯ অক্টোবর তাঁর করোনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তখন থেকে অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল এই প্রবীণ আইনজীবীর।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ২০১৭ সালে বাম পায়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর থেকে তাঁর চলাফেরা সীমিত হয়ে পড়ে। এ কারণে তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। ৮৫ বছর বয়সী খ্যাতিমান এই মানুষটি বিছানায় শুয়েই সময় পার করছিলেন।