ব্রাশফায়ার থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষকের স্মৃতিচারণা - দৈনিকশিক্ষা

ব্রাশফায়ার থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষকের স্মৃতিচারণা

রাঙামাটি প্রতিনিধি |

‘ফলাফল ঘোষণার পর একটি চাঁদের গাড়িতে গাদাগাদি করে আমরা প্রায় ২৫ জন বাঘাইছড়ির উদ্দেশে রওনা দেই। গাড়িতে  প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, পুলিশ-ভিডিপিসহ সবাই ছিলাম আমরা। আমাদের গাড়ি বাঘাইহাট পৌঁছানোর পর সেখানে আমাদের অপেক্ষায় থাকা অন্য দুটি কেন্দ্রের নির্বাচনকর্মীরা আরো দুটি চাঁদের গাড়ি নিয়ে বহরে যোগ দেয়। বিজিবির টহল গাড়িসহ মোট চারটি গাড়ি বহরে। সামনেই ছিল বিজিবির একটি গাড়ি।

ঠিক পেছনেই আমাদের গাড়িটি। গাড়িগুলো নয় মাইল এলাকায় পৌঁছানো মাত্রই পাশের উঁচু পাহাড় থেকে গাড়িবহর লক্ষ্য করে গুলি আসতে থাকে। গুলি উপেক্ষা করে আমাদের সব গাড়ির চালক ছুটতে থাকেন। তাঁরা না থেমে দ্রুত চলে আসেন সরাসরি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ এক ভয়াবহ বীভৎস অভিজ্ঞতা। কান্না, চিৎকার, রক্ত, হাহাকার...। একের পর এক আমাদের সহকর্মী আর একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করা মানুষগুলো...।’ এতটুকু বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মুসলিম ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইয়াসমিন আক্তার। তিনি কথা শেষ করতে পারেন না।

গতকাল সোমবার রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে সন্ত্রাসী হামলার শিকার গাড়িবহরে ছিলেন পোলিং অফিসার ইয়াসমিন আক্তার। নিজে বেঁচে গেলেও কাছের মানুষদের হারানোর বিষয়টি তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘এ এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা! আমার সহকর্মী আমির হোসেন ও তৈয়ব আলী মারা গেছেন। বান্ধবী কাঞ্চি, বড় ভাই বদিউজ্জামান গুরুতর আহত। আহত-নিহত সবাই কমবেশি পরিচিত। সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেন আমাদের সহকর্মী মারা গেল?’

ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে আগের দিন দুপুরেই বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌঁছাই আমরা। সেখানে প্রতিটি মুহূর্তই খুব সুন্দর এবং স্মৃতিময় ছিল আমাদের। ভোটের দিন সকালে শান্তিপূর্ণভাবেই শুরু হয় ভোটগ্রহণ এবং সবার অংশগ্রহণে কোনো প্রকার সংঘাত-সহিংসতা বা অভিযোগ ছাড়াই শেষ হয় ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনা করি আমরা। তাতে বিজয়ী হয় ঘোড়া প্রতীক (সুদর্শন চাকমা)।’

‘কবে বন্ধ হবে এসব বর্বরতা? আর কত লাশ পড়বে পাহাড়ে? কীভাবে আমরা সরকারি দায়িত্ব পালন করব’, প্রশ্ন করেন ইয়াসমিন আক্তার। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বাচন কিংবা যেকোনো সরকারি দায়িত্ব পালন করা সব সময়ই কঠিন। আমাদের নানা ধরনের চাপে থাকতে হয় সব সময়। কিন্তু এমন ভয়াবহ বর্বরতা ভবিষ্যতে আমাদের আরো বেশি চাপে ফেলবে। আমি অনুরোধ করব, আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038309097290039