মেহেরপুরের গাংনীর বামুন্দী নিশিপুর স্কুল এন্ড কলেজের আইসিটি ভবন নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভবনের প্রথমতলার ছাদ ডালাইয়ের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় তা বন্ধ করে দেয়া হয়। এদিকে ভবন নির্মানে অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে আইসিটি ভবন নির্মানের কার্যাদেশ পান কুষ্টিয়ার কমলাপুর এলাকার ঠিকাদার একরামুল হক।
বামুন্দী স্কুল এন্ড কলেজর অধ্যক্ষ আব্দুল হাদি জানান,নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করছিলো ঠিকাদারের লোকজন। একারণে তিনি সহ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ইতো পূর্বে নিম্নমানের ১৫ টন রড আনা হয়েছিলো সেগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজ ভবনের প্রথমতলা ডালাই দেয়া হবে তাকে জানানো হয়নি। এমনকি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সদস্যদের জানানো হয়নি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ফারুক হোসেন বলেন, বালি কিছুটা নিম্নমানের ছিলো। পরে ভালো বালি আনা হয়েছে। এছাড়া অধ্যক্ষ ও হবিবার রহমান হবি কিছু টাকা চেয়েছিলো না দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ইতোপূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী পালনের জন্য ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে তাদের। টাকা নেওয়ার বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষ আব্দুল হাদি ও হবিবার রহমান হবির সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে ম্যানেজার ফারুক হোসেন।
টাকা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বামুন্দী স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হবিবার রহমান বলেন, শিক্ষা প্রকৌশলী শাহানাজ খানম ও ঠিকাদারের ম্যানেজার ফারুক হোসেন তাদের অনিয়ম আড়াল করতেই টাকা চাওয়া হয়েছে বলে অপপ্রচার করেছে। বিধি মোতাবেক কাজ করলে সার্বিক সহায়তা করবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ।
বামুন্দী স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আব্দুস সাত্তার বলেন এত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কোথাও কাজ হয়েছে বলে মনে হয় না। তদন্ত করে ঠিকাদার ও দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি।
বামুন্দী স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করলে বন্ধ করবে এটা স্বাভাবিক। তিনি আরো বলেন,বামুন্দী নিশিপুর স্কুল এন্ড কলেজ আমাদের এলাকার প্রতিষ্ঠান এই প্রতিষ্ঠানে আমাদের সন্তানরাই পড়ালেখা করবে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করলে ভবনটি দীর্ঘস্থায়ী হবেনা। কাজের মানের তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া দাবি করেন তিনি।
উপসহকারী প্রকৌশলী শিক্ষা শাহানাজ খানম জানান,নিম্নমানের বালি দিয়ে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিলো একারণে বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বামুন্দী স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হবিবার রহমান তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
নিম্নমানের বালি দিয়ে ছাদ ডাইয়ের কাজ চলছে কেন ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে সাংবাদিকের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে উপসহকারী প্রকৌশলী শিক্ষা শাহানাজ খানম।
শ্রমিক সর্দার শোভাচান,হামিদুল ইসলাম ও ফরমান আলী বলেন, বিভিন্ন দিকের বাধার কারনে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ঠিকাদারের অনুমতি পেলে আবার কাজ শুরু হবে।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।