বাবা শহরে ফেরি করে সবজি বিক্রি করতেন। মাথার ওপর বটগাছের মতো ছায়া হয়ে থাকা বাবাটি এখন নেই। বছর ছয়েক আগে মারা গেছেন তিনি। তারপরও দমে যাননি ঝরনা আক্তার। অদম্য এই মেধাবী বড় দুই ভাইয়ের অভাবের সংসারে থেকেও চালিয়ে গেছেন পড়ালেখা। এবার তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় ঝরনার অবস্থান তৃতীয়। কিন্তু এত ভালো সুযোগ পেয়েও মনে আনন্দ নেই তার। অভাব-অনটনের কারণে ভবিষ্যতে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে তাকে। অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ভর্তি নিয়েও।
ঝরনা আক্তার সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের আগনরায়েরগাঁও গ্রামের মৃত হারিছ মিয়ার মেয়ে। স্থানীয় বড়খাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা ঝরনা দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তৃতীয়। বাবার মৃত্যুর পর রয়েছেন বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন ও আল আমিনের অভাবের সংসারে।
বাবা হারিছ মিয়া বিভাগীয় শহরে ফেরি করে সবজি বেচে সংসার চালাতেন। প্রায় ছয় বছর আগে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। বাবার মৃত্যুর পর এইচএসসি পড়ূয়া ইসলাম উদ্দিন সংসারের হাল ধরেন। সিলেটের আম্বরখানা এলাকার জালালাবাদ গ্যাস পাম্পের বিপরীতে শাক-সবজির ব্যবসা করেন দুই ভাই। অভাবের সংসারেও পড়ালেখায় এগিয়ে থাকা ঝরনা আক্তার মানবিক শাখা থেকে শাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করে চমক দেখিয়েছেন।
বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন বলেন, অর্থের অভাবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেই তার সঙ্গে ব্যবসায় যোগ দেন ছোট ভাই আল আমিন। ছোট এই কাঁচামালের ব্যবসা করে তিন বোনের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বড়খাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নজির আহমদ বলেন, ঝরনা হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার ভাইয়েরা সবজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। ঝরনার পড়ালেখার সাহায্যের জন্য সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
ঝরনাকে কেউ আর্থিকভাবে সাহায্য করতে চাইলে তার বড় ভাইয়ের ০১৭৩৪৪২৯৯৭৩ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।