ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি - Dainikshiksha

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আশৈশব আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। স্বপ্ন আমাদের বাঁচিয়ে রাখে, জীবনযুদ্ধে শক্তি সঞ্চার করে, সামনে এগিয়ে যেতে সাহস জোগায়। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও রয়েছে অনেক স্বপ্ন। ছোট ছোট পা ফেলে তারা স্কুলের চৌকাঠ পেরোতেই কলেজে প্রবেশ করে। আবার কলেজের গণ্ডি পার হলে স্বপ্ন ডানা মেলে বৃহৎ আকাশে পাখা মেলবার। আর এভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন ও ভর্তিযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় প্রায় সবাইকে। অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রী উভয়ের কাছেই এসএসসি পরীক্ষার পর যে কোনো একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বুয়েট বা ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাওয়া যেন যুদ্ধজয়ের মতো মনে হয়। ভর্তি পরীক্ষার পূর্বে বা মধ্যে ছাত্রছাত্রীরা কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করবে, সেটাই আজকের সংক্ষিপ্ত আলোচনায় আসবে। সোমবার (২৬ আগস্ট) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন ড. প্রতিভা রানী কর্মকার।

প্রথমেই মনে রাখতে হবে, স্কুল বা কলেজে অধ্যয়নের সময় পরীক্ষা যেমন আমাদের জীবনে বহুবার এসেছে, নিজের পছন্দের ভালো কোনো বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ কিন্তু তেমন বারবার আসবে না। তাই ছাত্রছাত্রীদের মন দিয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন করা সমীচীন। এই সময়টুকুতে নিজেকে অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতে পারলে ভালো হয়। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা ভালো; কিন্তু কেবল একটি লক্ষ্য না থাকাই শ্রেয়। তবে যে লক্ষ্যই থাকুক না কেন, ভেবেচিন্তে ঠিক করতে হবে এবং তাই স্থির থাকবে। একবার কোনো লক্ষ্য ঠিক করার পর অন্যের কথায় বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করার আগে নিজের ইচ্ছাশক্তি, মা-বাবা, শিক্ষক ও অভিজ্ঞজনের সুপরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। আর আবেদন করার পর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ না পছন্দের বিষয়টি নির্বাচিত না হয়। ধৈর্য, সততা, নিষ্ঠা, পূর্ববর্তী শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের সম্যক ধারণা, বর্তমান ও পূর্ববর্তী সময়ের নিজ দেশ ও বহির্বিশ্বের খুঁটিনাটি ঘটনা এবং প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ে স্বচ্ছ জ্ঞান নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে সফলতা আসবেই। তবু যদি কোনো কারণে ভালো ফল না পাওয়া যায় পরবর্তী সুযোগের জন্য, অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করতে হবে। অনেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেলে বাবা-মা বা অভিভাবককে এতটা ভেঙে পড়তে দেখে যে আর লেখাপড়া বা ভর্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের মনোবলই পায় না। কাজেই আপনি যতই ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ূন না কেন, প্রিয়জন বা সন্তানের এই গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে তার পাশে থাকার জন্য বাইরে নিজেকে শক্ত রাখুন। জয় আসবেই। তাছাড়া আজ সফলতার বিজয় মুকুট না পেলে কাল যে সে সেটা পাবে না, এমনটি নয়। তাকে শুধু চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সে যাই হোক, ভর্তি পরীক্ষায় আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো, মনকে শান্ত রাখা। ভর্তি পরীক্ষার সময়সীমা নির্দিষ্ট ও সংক্ষিপ্ত থাকে। এই নির্দিষ্ট ও সংক্ষিপ্ত সময়ে নির্দেশিত প্রশ্ন ভালোভাবে বুঝে উত্তর দিতে হয়। যেমন- ইংরেজি বিষয়ে অনেকে 'প্রশ্ন' কী উত্তর চেয়েছে তা না বুঝে এলোমেলো উত্তর লিখে আসে আবার রচনামূলক প্রশ্নের একটির উত্তর পুরোটা না লিখে অন্যটিতে চলে যায়, কোথাও-বা প্রশ্নের নম্বর ও উত্তরে গরমিল থাকে। কাজেই পরীক্ষার পূর্বে নিজের কাছে পরীক্ষা দেওয়া ভালো পন্থা। এতে সাহস এবং মনোবল দুই-ই বাড়বে। নৈর্ব্যক্তিক উত্তর দেওয়ার সময় বৃত্ত ভরাটের ক্ষেত্রে, রোল নম্বর পূরণের ক্ষেত্রে, বিষয়ভিত্তিক উত্তর দেওয়ার জন্য নির্ধারিত অংশ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও মেধার পাশাপাশি মানসিক স্থিরতা দরকার। পরীক্ষার শুরুতেই পরীক্ষার্থীকে উদ্বিগ্ন হয়ে গেলে চলবে না। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে আসা এবং প্রতিটি দরকারি জিনিস আগের রাতে গুছিয়ে রাখা একান্ত দরকার।

সবশেষে বলা যায়, মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থা, মা, বাবা, শিক্ষক-শিক্ষিকা বা গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সততা, নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রম এবং একাগ্রতা সফলতার একটি না একটি দরজা উন্মুক্ত করবেই। আর উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে আমাদের দেশের উন্নয়নে সবাই মিলে কাজ করলেই সত্যিকারের সফলতা ও সমৃদ্ধি আসবে।

ড. প্রতিভা রানী কর্মকার : পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038530826568604