ভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ ‘চীন-কোরিয়ার পথে হাঁটছে’ - দৈনিকশিক্ষা

ভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ ‘চীন-কোরিয়ার পথে হাঁটছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর যে পদ্ধতি অবলম্বন করেছে বাংলাদেশও সেই পথ অনুসরণ করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সেই জায়গা থেকে দ্রুত যত বেশি সম্ভব নমুনা পরীক্ষায় নজর দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

নভেল করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা কিন্তু অনেক কিছু শিখি, চায়না কোরিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে। তারা কিন্তু এটা কন্ট্রোল করেছে টেস্টিংয়ের মাধ্যমে, আইসোলেশনের মাধ্যমে, মুখে মাস্ক পরে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। আমাদের সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমাদের এখনই সময়। আমরা চাই না যে, এটা বেড়ে যাক এবং এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাক। তাহলে পরে আমেরিকা ও ইউরোপের মতো হয়ে যাবে। আমরা তখন অনেক কষ্টে পড়ব। এ বিষয়টি আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে।”

গত ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহানে প্রথম নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেয়। এরপর তা পাশের জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরসহ আশপাশের দেশগুলোতে ছড়ায়। একইসঙ্গে ইরান ও ইতালিতে এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। এরপর তা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে।

আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেলেও উৎসস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা আশি হাজারের ঘরে রয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের সামান্য বেশি। দক্ষিণ কোরিয়া সন্দেহভাজন প্রায় রোগীকে পরীক্ষা করে আলাদা করে ফেলতে পারায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে বলে মনে করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ শুরুর দিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও নেতারা সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরতে বারণ করলেও এখন সেই সিদ্ধান্ত বদলের কথা ভাবছে। অপরদিকে চীন, কোরিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর থাইল্যান্ডে সামাজিক সংক্রমণ রোধে ব্যাপকভাবে মাস্ক পরা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, সন্দেহভাজনের দ্রুত নমুনা পরীক্ষা এবং আক্রান্তকে আলাদা করার ওপর জোর দিয়েছে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া, সেই পথ অনুসরণ করা হচ্ছে।

সে জন্য নমুনা পরীক্ষা যতটা বেশি সম্ভব করার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচশ’র বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এটাকে এক থেকে দেড় হাজারে নিয়ে যেতে চান তারা। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “টেস্টিং কার্যক্রম আমরা অনেক বৃদ্ধি করেছি। ১৪-১৫টি জায়গায় টেস্টিং কার্যক্রম হচ্ছে। এই টেস্টিং কার্যক্রম আমরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও নিয়ে যেতে চাচ্ছি। যার ফলে টেস্টিংয়ের ব্যবস্থাও বেড়ে যাচ্ছে। আগামীতে আমরা প্রতিদিনের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাকে এক থেকে দেড় হাজারে নিয়ে যেতে চাচ্ছি।”

প্রথমে শুধু ঢাকায় আইইডিসিআরে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা চলছিল। এরপর তা বাড়িয়ে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, আইপিএইচ, আইসিডিডিআরবি, আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইদেশীতে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

এছাড়াও চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিকাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও এই রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

পরীক্ষা সম্প্রসারণের পর শনি ও রোববার নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। শনিবার নতুন নয়জনের দেহে এই ভাইরাস ধরা পড়ে, রোববার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। এখন বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮ জন, মৃত্যু হয়েছে নয়জনের।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাজধানীর আরও দুটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফুলবাড়িয়া এলাকার রেলওয়ে হাসপাতাল এবং নয়াবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতাল।

এ নিয়ে রাজধানীতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য ‘ডেডিকেটেড’ হাসপাতালের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচটিতে। এর আগে রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কোভিড-১৯ আক্রান্তদের জন্য ‘ডেডিকেটেড’ করা হয়েছিল।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হাউড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন ওষুধ তৈরি করে রাখা হয়েছে। আমরা হাউড্রোক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ তৈরি করে রেখেছি, যাতে হাজার হাজার লোক চাইলে ওষুধ দিতে পারি। সে ব্যবস্থাও আমরা করে রেখেছি।

নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তে জিন এক্সপার্ট মেশিন আনার কথাও ভাবছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাহিদ মালেক বলেন, “আমি পত্রপত্রিকায় দেখতে পেয়েছি, জিন এক্সপার্ট মেশিন এ কাজে ব্যবহার হতে পারে। আমরা সেদিকেও প্রস্তুত আছি। প্রায় এক দেড় মাস আগে আমাদের জিন এক্সপার্ট মেশিন সম্বন্ধে জানানো হয়েছে। কিন্তু এ মেশিনটি যে কিট ব্যবহার করবে তা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। যে কোম্পানি দিতে পারে, সে কোম্পানিকে আমরা অর্ডার দিয়ে রাখছি এক থেকে দেড় মাস আগে।”

“আজ পর্যন্ত আমরা একটা কিটও পাইনি। যখন কিট পাব তখন জিন এক্সপার্ট মেশিনও আমরা ব্যবহার করব যতটুকু সম্ভব। এখানে যদি কোনো ভুল ধারণা হয়ে থাকে তাহলে ভুল ধারণাটি দূর হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।”

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067539215087891