টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকদের পিটুনিতে ইসরাত জাহান লুনা নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে। এতে তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সে এখন মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আজ শনিবার তার জীব বিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের নয়পাড়া গ্রামের কামরুল হাসান প্রায় দুই বছর আগে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী তেলিপাড়া গ্রামের দুবাই প্রবাসী শুকুর আলীর মেয়ে তাসলিমা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর শ্বাশুড়ির সঙ্গে তার পারিবারিক কলহ শুরু হয়। প্রায় চার মাস আগে স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাবস্থায় কামরুল হাসান স্ত্রীকে আনতে শ্বশুর বাড়ি গেলে সেখানে শাশুড়ি ফাতেমা বেগমের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। পরে শ্বাশুড়ি কামরুলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীকে বাড়ি আসতে দেননি। গত সোমবার রাতে তাসলিমা পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। খবর শুনে গত বৃহস্পতিবার কামরুলের তিন বোন নবজাতককে দেখতে যায়। সেখানে ফাতেমা বেগম তাঁদেরকে গালাগালি করেন।
কামরুল হাসান বলেন, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফাতেমা বেগম নবজাতক নাতিকে ঢিল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ছোট বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী ইসরাত জাহান লুনা তাকে ধরে ফেলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফাতেমা বেগম লুনার চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে চড়-থাপ্পর ও কিল ঘুষি মারেন। এতে সে অচেতন হয়ে পড়ে। একই সময় ফাতেমার পরিবারের সদস্যরা কামরুলের অন্য দুইবোনকে মারধর করেন। ওই সময় কামরুলের স্ত্রীকে তাঁর মা টেনে ঘরের ভেতর নিয়ে আটকিয়ে রাখেন। খবর পেয়ে কামরুল ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাদের উদ্ধার করেন। আর ছোট বোন ইসরাত জাহানকে চিকিৎসার জন্য কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায় জানান, তার দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
লুনার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন বলেন, ‘সে যেন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল মালেক বলেন, লুনার পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক জাকির খান বলেন, এ ঘটনায় লুনার মা কদভানু বেগম থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। দুই পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।