ভারতে প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক - Dainikshiksha

ভারতে প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |
মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষার দিন বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলে পৌঁছন ময়নাগুড়িতে পরীক্ষার অফিসার ইন চার্জ বিশ্বনাথ ভৌমিক। স্কুলে ঢুকে তো তিনি তাজ্জব! অভিযোগ, বিশ্বনাথ দেখেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায় প্রশ্নপত্র খুলে ফেলেছেন। পরীক্ষা শুরু হয় বেলা বারোটায়। তাই এত আগে একক ভাবে প্রশ্নপত্র খোলার কোনও নিয়ম নেই। এই নিয়ে তুমুল তর্ক হয় দু’জনের মধ্যে। 
 
বিষয়টি জানাজানি হতেই মুখ খুলতে শুরু করেন ওই স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ। কয়েক জন বিশ্বনাথকে ফোন করে অভিযোগের ঝাঁপি উগরে দেন। তাঁদের দাবি, এ বারে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম থেকেই এ ভাবে আগেভাগে প্রশ্নপত্র দেখে উত্তর তৈরি করে স্কুলের এক মেধাবী ছাত্রকে জানিয়ে দিচ্ছিলেন হরিদয়াল। অঙ্ক পরীক্ষার দিন বিশ্বনাথ দেখে ফেলায় তা বন্ধ হয়। শিক্ষকদের আরও ধারণা, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়েও সম্ভবত এমনই করে থাকেন হরিদয়াল। তাঁদের কারও কারও বক্তব্য, ‘‘না হলে এই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে যারা প্রথম দশের মধ্যে থাকে, তারা পরে ভাল রেজাল্ট করতে পারে না কেন?’’ কোনও কোনও শিক্ষকের দাবি, উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় থাকে ছাত্ররা, অথচ মাধ্যমিকে তত ভাল ফল হয় না। এ বার হয়তো সেই ‘দুর্নাম’ই ঘোচাতে চেয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। 
 
ময়নাগুড়ি এলাকায় মাধ্যমিক পরীক্ষার অফিসার-ইন-চার্জ বিশ্বনাথবাবু ওই এলাকার স্কুল সাব-ইন্সপেক্টরও (এসআই)। তাঁর পাওয়া এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-সহ একটি লিখিত রিপোর্ট বুধবারই কলকাতায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরে পাঠানো হয়। বিশ্বনাথের কথায়, “স্কুলের কয়েক জন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাতেও জানতে পারি, পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র খুলে ফেলতেন হরিদয়ালবাবু। তার পরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কয়েক জন শিক্ষককে দিয়ে তার উত্তর লিখিয়ে কয়েক জনকে তা মোবাইল ফোন মারফত জানিয়ে দিতেন।’’
 
এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে হরিদয়াল, জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তাদের এবং সুভাষনগর হাইস্কুলের শিক্ষকদেরও শুক্রবার কলকাতায় তলব করেছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায়, ‘‘যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তা হলে নজিরবিহীন শাস্তি দেওয়া হবে।’’ তাঁর কথায়, এটা যদি সত্যি হয়, তা হলে বলতে হবে উনি শিক্ষকতায় থাকার অনুপযুক্ত। পাশাপাশি কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘আর পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে।’’ তার আগেই অবশ্য আজ, বৃহস্পতিবার হরিদয়ালকে শিলিগুড়িতে ডেকে পাঠিয়েছেন পর্ষদের আঞ্চলিক কর্তারা। 
 
এ বারেই মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ে শিক্ষকদেরও মোবাইল ফোন নিয়ে স্কুলে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পর্ষদ। সব শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের ঘরে ফোন জমা রেখে যেতে হবে। এই প্রসঙ্গ তুলে এক শিক্ষকই বলেন, ‘‘এখানে তো দেখা যাচ্ছে, রক্ষকই ভক্ষক!’’ যদিও ছাত্রদের বেশির ভাগই বিশ্বাস করে না, হরিদয়াল এমন করতে পারেন। 
 
ঘটনার অভিঘাত এতটাই যে, সন্ধ্যায় বিডিও জরুরি বৈঠক করেন জেলা শিক্ষা দফতরের পরিদর্শক ও ময়নাগুড়ি থানার আইসি-র। তৃণমূলের শিক্ষাসেলের ময়নাগুড়ি ব্লকের সভাপতি হরিদয়ালের শাস্তি চেয়ে স্মারকলিপি দেয় বিজেপিও। রাতে হরিদয়ালের বাড়িতে হাজির হন, স্কুলের শিক্ষকদের অন্য একটি অংশ। তাঁদের দাবি, এই রাজনৈতিক চক্রান্ত।
 
হরিদয়ালের বক্তব্য, অঙ্ক পরীক্ষার গ্রাফ পেপারে স্ট্যাম্প বা পরীক্ষাকেন্দ্রের ছাপ দেওয়ার জন্যই সময়ের একটু আগে প্রশ্নপত্র খুলতে হয়। একই কারণে ইংরাজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও আগে খুলতে হয়েছিল বলে তিনি জানান৷ তবে ফোনে কাউকে প্রশ্ন বলে দেওয়ার কথা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি৷
 
সৌজন্যে: আনন্দবাজার পত্রিকা
অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035171508789062