ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে আটটি উপজেলার ২৪৯টি স্কুলে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এ তালিকায় প্লাবিত অন্তত ১৯৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানায়, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে জেলার সদর উপজেলায় ২২টি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ৩টি, ধর্মপাশা উপজেলায় ৫৯টি, তাহিরপুর উপজেলায় ৩০টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ২৭টি, দোয়াবাজার উপজেলায় ১৮টি, ছাতক উপজেলায় ১০টি এবং জামালগঞ্জ উপজেলায় ৩০টি বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।
এছাড়া জেলার ৬টি উপজেলার অন্তত ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে বলে দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানিয়েছে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র।
এছাড়া আরও শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা। যেসব স্কুল এখনো প্লাবিত হয়নি, সেগুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত বাড়তে থাকলে জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া কয়েকদিনের ভারীবর্ষণে প্লাবিত হয়েছে দেশের বেশ কিছু অঞ্চল। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাঙামাটিতে ১৬৫, হাতিয়ায় ১৩৫, সীতাকুণ্ডে ১২৯, টাঙ্গাইলে ১২২, কুতুবদিয়ায় ১১১, সন্দ্বীপে ১০১ এবং চট্টগ্রামে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সকালের পর থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে দেশজুড়ে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর ১২টার পর বৃষ্টির দাপট বাড়তে থাকে দেশের মধ্যাঞ্চলে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টা থেকে বেলা সোয়া দুইটা পর্যন্ত ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।
আজ সকাল নয়টায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের লক্ষ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে (সচিবালয়স্থ ৬নং ভবনের ৫ম তলা) কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ৪২৫ নম্বর রুমে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর ০২৯৫৭০০২৮। এই কন্ট্রোল রুমে সারাদেশে বন্যা সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। বন্যা সংক্রান্ত তথ্য দেয়ার জন্য সবাইকে কন্ট্রোল রুমের বর্ণিত নাম্বারে ফোন করার অনুরোধ করা হয়েছে।