বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যশোর শিক্ষা বোর্ড ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সেবা দিচ্ছে। শিক্ষা বোর্ডের পুরাতন ভবনের প্রথমতলায় ভার্চুয়াল কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে সব কর্মকর্তারা সেবা গ্রহিতাদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন ও সেবা দিচ্ছেন। গত ১ জুন থেকে এই কেন্দ্র স্থাপন করা হলেও আজ বুধবার (৩ জুন) শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে ভার্চুয়াল কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
জানা গেছে, তিনদিনে একশোর বেশি সেবা গ্রহীতা ভার্চুয়াল কেন্দ্রে এসে সেবা নিয়েছেন। তার মধ্যে সরাসরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে বিভিন্ন ধরনের সেবা ও পরামর্শ নিয়েছেন প্রায় ৫০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। এছাড়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথেও সেবা গ্রহীতারা কথা বলেন। ভার্চুয়াল কেন্দ্রটি নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষা বোর্ডের সহকারী প্রকোশলী আরিফ হোসেন, উপ-সহকারী প্রকোশলী কামাল হোসেন ও ডাটাএন্ট্রি অপারেটর শফিউদ্দিন।
সেবা নিতে আসা বাগেরহাট স্মরণখোলা আইডিয়াল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক ওসমান গণি দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, অষ্টম শ্রেণির বৃত্তির তালিকা ভুল করে বাগেরহাট সদর উপজেলার মধ্যে দেয়া হয়েছিল। ভার্চুয়াল কেন্দ্র থেকে চেয়ারম্যান স্যারকে জানানোর তালিকা সংশোধন করে স্মরণখোলা উপজেলার মধ্যে দেয়া হয়।
যশোর সদরের বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া বিনতে আনোয়ার দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, রেজিস্ট্রেশন কার্ড হারিয়ে গেছিল। নতুন করে উঠাতে শিক্ষা বোর্ডে এসেছিলাম। ভার্চুয়াল কেন্দ্রে চেয়ারম্যান স্যারের সাথে কথা বলার দশ মিনিটের মধ্যে নতুন রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেয়েছি।
বাগেরহাট মোড়লগঞ্জের দেবগাহাটি বিশ্বেশ্বর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার মন্ডল দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এক ছাত্রের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়নি। ভার্চুয়াল কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলে সহজেই আবেদন করতে পেরেছি। আশা করছেন দ্রুত ফল পেয়ে যাবে শিক্ষার্থী।
সাতক্ষীরা সিটি কলেজের ছাত্র সাইফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, দেশের বাইরে লেখাপড়া করতে যাবো। তাই শিক্ষা বোর্ডে এসেছিলাম এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সব কাগজপত্র সত্যায়িত করতে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলার পর দ্রুত সেবা পাই।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ভার্চুয়াল কেন্দ্র থেকে কাছে সেবা নিতে ৩০ জন সরাসরি তার সাথে কথা বলেছি। নিজে উপস্থিত থেকে সেসব কাজ করে দিয়েছি। এই দুর্যোগঘন পরিবেশেও সবাই আগের মতো সেবা পাচ্ছেন।
চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, করোনার সংক্রমণ এড়াতে সেবা গ্রহীতাদেরকে দেখা করার জন্য কর্মকর্তাদের কক্ষে প্রবেশ না করে ভিজিটর কক্ষ থেকে সেখানে সংরক্ষিত কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যশোর বোর্ডের সব সেবা অনলাইনে সম্পন্ন হয়। অভিযোগও অনলাইনে নেয়া হয়। তারপরও কিছু মানুষ নানা অভিযোগ নিয়ে আসেন। অনেকে নানা সমস্যা বিষয়ে পরামর্শ ও মতামত শেয়ার করার জন্য আসেন। সেই জন্য ভার্চুয়াল কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তবে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে শিক্ষা বোর্ডে না আসতে দৈনিক শিক্ষা ডটকমের মাধ্যমে অনুরোধ জানান তিনি।