মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ভাষাসংগ্রামী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এম এ রকীব (৯২) আর নেই। বার্ধক্যজনিত কারণে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে নওগাঁ শহরের চকদেবপাড়ায় নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিঊন)। গতকাল বাদ জুমা শহরের নওযোয়ান মাঠে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নওগাঁ কেন্দ্রীয় গোরস্তানে তার লাশ দাফন করা হয়। তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে ন্যাপের কার্যকরী সভাপতি আমিনা আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী জানান, এম এ রকীব ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এম এ রকীব ছিলেন তৎকালীন রাজশাহী জেলাভিত্তিক প্রশিক্ষণার্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার জন্য পশ্চিমবঙ্গে স্থাপিত ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়নের বালুরঘাট, বোয়ালদাড়, মালদা ও বহরমপুর ক্যাম্পের পরিচালক। বালুরঘাটে সিপিআইয়ের সহযোগিতায় ক্যাম্প গড়ে তোলেন এবং প্রশিক্ষণ দেন।
তিনি নওগাঁ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনি নওগাঁ জেলা ন্যাপের (মোজাফ্ফর) সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। নওগাঁর বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পরিষদ নওগাঁ তাকে ‘একুশে পরিষদ পদক’ প্রদান করে। তার মৃত্যুতে সিপিবি নওগাঁ জেলা কমিটি, একুশে পরিষদ নওগাঁসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।