ভিকারুননিসায় ফের ভর্তি বাণিজ্যের চেষ্টা, অস্থিরতা - দৈনিকশিক্ষা

আট থেকে ১০ লাখ টাকা নিচ্ছেভিকারুননিসায় ফের ভর্তি বাণিজ্যের চেষ্টা, অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ফের ভর্তি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। অবৈধ ভর্তির জন্য ছাত্রী জোগাড়ে নেমেছেন গভর্নিং বডির অনুগত মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের টেকনিশিয়ান ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান আতিক গং। শিক্ষার্থী প্রতি আট লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আতিকের সঙ্গে রয়েছে অভিভাবক পরিচয়ে কতিপয় আন্তর্জাতিক মাফিয়া ও প্রতারক চক্রের সদস্য। এরা নিজেদেরকে অভিভাবক সমিতির নেতা পরিচয় দেয়। বাস্তবে তারা ভর্তি বাণিজ্যে লিপ্ত। 

 এছাড়া সরকারি নির্দেশ অমান্য করে প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এসব অবৈধ ভর্তি বাণিজ্যও ও সব অপকর্মে ফের তৎপর হয়ে উঠেছে ভিকারুননিসার গভর্নিং বডির একাংশ।

এ অবস্থায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। গতকাল ভিকারুননিসার সার্বিক অনিয়ম তদন্তে আবার তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু এর পরও নিয়োগ ও অবৈধ ভর্তি প্রক্রিয়া থেমে নেই বলে জানা গেছে।

গত রবিবার ইস্যু করা মাউশি অধিদপ্তরের চিঠিতে বলা হয়, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ ও ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ আপাতত বন্ধ রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে ভিকারুননিসায় অধ্যক্ষ নিয়োগের কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত, তাই অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা বিধিসম্মত নয়। এমতাবস্থায় অধ্যক্ষ নিয়োগের সকল কার্যক্রম বাতিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

জানা যায়, অধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে ভিকারুননিসা দুটি পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমান গভর্নিং বডি ও শিক্ষকদের ক্ষুদ্রাংশ অধ্যক্ষ নিয়োগের পক্ষে। আর বেশির ভাগ শিক্ষক এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

সূত্র জানায়, গত ৯ ডিসেম্বর অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। গত ১ জানুয়ারি আবেদন গ্রহণের সময় শেষ হয়। ১৬ জন প্রার্থীর আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ছয়জন এবং বাইরে থেকে ১০ জন আবেদন করেছেন।

অরিত্রীর আত্মহত্যার পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী ভিকারুননিসার অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর সিনিয়র শিক্ষক হাসিনা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারি রাতে হঠাৎ করেই তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় গভর্নিং বডি। এরপর গভর্নিং বডির অনুগত আরেক শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়, যা নিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানটিতে।

ভিকারুননিসার গভর্নিং বডির সদস্য অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘কী যে কী হচ্ছে আমি জানি না। সব পলিটিকস। মন্ত্রণালয়ই বলেছিল, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চালালে বাণিজ্য হয়। এখন বলছে, অধ্যক্ষ নিয়োগ বন্ধ। এখন অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে কি না, তা পরবর্তী গভর্নিং বডির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

জানা যায়, ৬ জানুয়ারি থেকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি শুরু হয়েছে। কিন্তু গভর্নিং বডির কথামতো হাসিনা বেগম অবৈধ ভর্তি ও অধ্যক্ষ নিয়োগে রাজি না হওয়ায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গত বছরও ভিকারুননিসায় প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী অবৈধভাবে ভর্তি করানো হয়েছিল বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছিল।

এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু জিয়াউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। ভিকারুননিসার গভর্নিং বডি এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে পারে না। আর যাঁকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তিনি হবেন সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। তিনি অপারগ হলে তাঁর পরের জন। কিন্তু সেটা যদি পালন না হয়, তাহলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগও হবে অবৈধ। আমরা ভিকারুননিসার ব্যাপারটি গুরুত্বসহকারে দেখব।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভিকারুননিসার কথা শুনেছি। তবে এখন কোনো প্রতিষ্ঠানেরই অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই। সার্বিক অনিয়ম তদন্তে আমরা কমিটি গঠন করেছি।’

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039100646972656