ভুল প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি : অদক্ষ কর্মকর্তাদের শাস্তি চাইলেন এন আই খান - দৈনিকশিক্ষা

ভুল প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি : অদক্ষ কর্মকর্তাদের শাস্তি চাইলেন এন আই খান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করেও এমপিওভুক্তির নির্ভুল তালিকা করতে না পারার দায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। তালিকাভুক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অদক্ষতায় গড়পড়তা সমালোচনা শুনতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারকে। এইসব অদক্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন সাবেক শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খান।

গত ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত এমপিওভুক্তির তালিকায় প্রায় অস্তিত্বহীন, যুদ্ধাপরাধের আসামি প্রতিষ্ঠিত, সরকারিকৃত এবং আংশিক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম দেখে মন খারাপ করেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধান নেপথ্য কারিগর ও স্মরণকালের সেরা শিক্ষাসচিব এন আই খান। জার্মান ও যুক্তরাজ্য সফররত এন আই খান শনিবার টেলিফোনে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘দৈনিক শিক্ষায় দেখলাম প্রায় অস্তিত্বহীন, যুদ্ধাপধরাধী প্রতিষ্ঠিত, সরকারিকৃত প্রতিষ্ঠানও এমপিওর তালিকায়। শুধু তাই নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্ভোধন হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় দক্ষতার সাথে পুরো তালিকা ওয়েবসাইটে দিতে পারেনি। সনাতন পদ্ধতিতে মন্ত্রণালয়ের নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দিয়েছে যা শুনে মন খারাপ হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ফেসবুকের ইনবক্সেও ডজন ডজন অনিয়মের তথ্য পেলাম। এই দূর দেশে বসে এসব শুনে মন খারাপ হয়েছে বেশি। সংক্ষুব্ধরা সমালোচনা করছেন আওয়ামী লীগ সরকারের। অথচ এই ভুল তালিকার দায় মাত্র কয়েকজন কর্মকর্তার। ভুলের জন্য সফটওয়্যারের দোহাই দেয়াকে হাস্যকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সফটওয়্যারে সঠিক ইনপুট দেয়ার যোগ্যতার ঘাটতি ছিল কর্মকর্তাদের।’

দৈনিক শিক্ষার প্রধান উপদেষ্টা এন আই খান বলেন, দুই হাজার ৭৩০ প্রতিষ্ঠান বলা হলেও বাস্তবে নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে মাত্র ১৪২৮টি। এত কম সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের সঠিকতা যাচাইয়ের নানা মেকানিজম মন্ত্রণালয়ের রয়েছে। এমনকি তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর মানে-- ঘোষণার একদিন বা দুইদিন আগে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দিয়ে ভুল শোধরানোর জন্য মতামত আহ্বান করা যেত, যেমনটা আমি সচিব থাকাকালে পদোন্নতিসহ বিভিন্ন কাজে করেছিলাম।’

‘মন্ত্রণালয় যদি দাবি করে আবেদনকারীরা ভুল তথ্য দিয়েছে বা তথ্য গোপন করেছে তাই এমনটা হয়েছে, তাহলে তা আরও হাস্যকর যুক্তিH তাহলে প্রশ্ন আসবে, যদি ভুল তথ্য দেয়ার জন্য এমনটা হয় তাহলে এক বছরের বেশি সময় ধরে যাচাই করলেন কী?,’ যোগ করেন এন আই খান। 

‘কর্মকর্তাদের অদক্ষতার জন্য বিভাগীয় শাস্তি হওয়া উচিত। একবার শাস্তি দিয়ে অন্যদের মনে থাকবে অনেকবছর,’ বলেন তিনি।  

জানা যায়, নতুন এমপিওভুক্তির জন্য গত বছরের আগস্টে আবেদন করে নয় হাজার ৬১৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৭৩০টি প্রতিষ্ঠানকে ২৩ অক্টোবর এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়। এরমধ্যে ২০৪টি প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ বিবেচনায় এমপিও দেয়া হয়েছে। সেই হিসাবে সাত হাজার ১৫টি প্রতিষ্ঠানই অযোগ্য। তার মানে তথ্য যাচাইয়ের জন্য সময় পেয়েছে এক বছরেরও বেশি। যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব  মো. জাবেদ আহমেদ। 

নীতিমালা অনুযায়ী চার শর্ত পূরণকারী প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেয়া হয়েছে। শর্তগুলো হলো- প্রতিষ্ঠানের বয়স বা স্বীকৃতির মেয়াদ, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হার। প্রতিটি পয়েন্টে ২৫ করে নম্বর থাকে। কাম্য শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং স্বীকৃতির বয়স পূরণ করলে শতভাগ নম্বর দেয়া হয়। সর্বনিম্ন ৭০ নম্বর পাওয়া প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির জন্য বিবেচিত হয়েছে। এবার আবেদন করা প্রায় ৭২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান যোগ্যতা ও শর্তপূরণ করতে না পারায় এমপিও পায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই অনলাইনে তথ্য দিয়েছে। কিন্তু এমপিও তালিকা প্রকাশে দেখা গেছে, তথ্য যাচাই হয়নি। এ কারণে প্রায় অর্ধশত অযোগ্য অথবা প্রায় অস্তিত্বহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবার এমপিওভুক্ত হয়েছে। ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত, শিক্ষার্থী নেই, পাস নেই, স্কুল ঘর নেই এবং সরকারি হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানও এমপিও পেয়েছে। এমপিওভুক্ত হওয়া প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছে। যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামী, শান্তি কমিটির নেতা এবং বিএনপি-জামায়াত নেতাদের প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও এমপিও পেয়েছে।  এতে বোঝা যায় তালিকা যাচাই-বাছাই কতটা উদাসীনভাবে হয়েছে। 

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071918964385986