এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে ভুল প্রশ্ন বিতরণকারীসহ সংশ্লিষ্ট সব ধরণের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামসহ কয়েক জায়গায় অভিযুক্তদের অব্যাহতিসহ বিভিন্ন ধরণের শাস্তি শুরু হয়েছে বলে জানান সচিব।
রোববার রাত দশটা পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যায়, ভুলের জন্য দায়ী অন্তত ১৬ কেন্দ্র সচিব এবং ৩৭ কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ভুলের শিকার শিক্ষার্থীদের প্রতিবেদন কেন্দ্রগুলো থেকে সংগ্রহ করেছে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড।
তিনি আরও বলেন, শনিবারের পরীক্ষায় দায়িত্বে অবহেলাকারীদের প্রত্যেককে ইতিমধ্যে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আরও কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত তদারকি করা হয়েছে যাতে কোনও ধরণের ভুল না হয়।
গত শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে নতুন ও পুরনো সিলেবাসের প্রশ্ন বিতরণে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন সারাদেশের অন্তত ২০টি পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব, কক্ষ পরিদর্শক ও সংশ্লিষ্টরা। বাংলা ১ম পত্রে সর্বশেষ সেশনের পরীক্ষার্থীকে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্ন আর পুরনো সেশনের পরীক্ষার্থীকে নতুন সিলেবাসের প্রশ্ন দেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অনেক কেন্দ্রে ভুল বুঝতে পেরে সময় বাড়িয়ে নতুন প্রশ্ন বিলি করে আবার পরীক্ষা নেয়া হয় ওইদিন। আবার শত শত পরীক্ষার্থীকে এ সুযোগ দেয়া হয়নি। ফলে বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের এমন ভুলের কারণে কম নম্বর পাবে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে এর যৌক্তিক সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া কয়েকটি জেলার কয়েকটি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্রের ফটোকপি দিয়ে পরীক্ষা নিতে হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষার এমসিকিউ অংশের প্রশ্নে লেখা রয়েছে ১০১৯ খ্রিস্টাব্দের সিলেবাস অনুযায়ী।
নতুন পুরনো মিলিয়ে বাংলা প্রথম পত্রের তিন ধরণের পরীক্ষার্থী ছিলো। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের সিলেবাসের পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি এবার পরীক্ষা দিচ্ছে ২০১৬ ও ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের সিলেবাসের পরীক্ষার্থীরা। অন্যান্য বারের মত এবারও ফেল করা ও ইম্প্রুভমেন্ট এর জন্য অনেক পুরনো পরীক্ষার্থী আবার পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের এক সিলেবাসে যেসব গল্প-কবিতা আছে, অন্য সিলেবাসে তার বেশ কয়েকটি গল্প-কবিতা বাদ দিয়ে নতুন গল্প-কবিতা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। ফলে এক সিলেবাসের পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নের সাথে অন্য সিলেবাসের পরীক্ষার্থীদের অনেক প্রশ্নে মিল ছিলো না।
এব্যাপারে শিক্ষা বোর্ড আগে থেকেই কেন্দ্র সচিবদের সতর্ক করে নির্দেশনা জারি করেছিলো। কিন্তু অনেক পরীক্ষা কেন্দ্রে সেই নির্দেশনা যথযথভাবে অনুসরণ করতে পারেননি পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা। তারা না বুঝে এক সিলেবাসের পরীক্ষার্থীকে অন্য সিলেবাসের প্রশ্ন দিয়েছেন। এরফলে অনেক পরীক্ষার্থী সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি।