ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে নিয়মিত সিলেবাসের পরীক্ষার্থীরা অনিয়মত সিলেবাসের ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে ৪৮ পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) উপজেলার শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১১৬নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সচিব ও লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা ৪৮ পরীক্ষার্থীর এমন খাতা পেয়েছি। এ ঘটনার পর অনিশ্চয়তায় ভুগছেন পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা।
উপজেলার চারটি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ বছর ২১টি কক্ষে ১২শ ৫৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন। এর মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থী ৫১ জন। যার মধ্যে ৪৮ পরীক্ষার্থী পুরাতন তথা ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের সিলেবাসের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছেন।
ভুলপ্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়া দোগাছি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, পুরাতন সিলেবাসের প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর ওই কক্ষে থাকা ২ জন কক্ষ পরিদর্শককে অবগত করি। কিন্তু তারা ধমক দিয়ে আমাদের ওই প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা দিতে বাধ্য করে। নতুন সিলেবাস পড়ে এসে পরীক্ষার হলে পুরাতন সিলেবাসের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা কারোই ভালো হয়নি বলে জানায় পরীক্ষার্থীরা।
পরীক্ষার্থীর অভিভাবক রশিদুল ইসলাম বলেন, আমি আমার স্বপ্ন ভঙ্গের দারপ্রান্তে। আমার মেয়ে কান্নায় ভেংগে পড়েছে।খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। সে চূড়ান্তভাবে ভেংগে পড়েছে। কার ভুলের জন্য আমার এ শাস্তি। কে এর জবাব দিবে?
দোগাছি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলম জানান, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। আমি তাদের মানসিকতা দেখে চিন্তিত। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
পরীক্ষা কেন্দ্রের তদারকীর দায়িত্বে থাকা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সুমন আহম্মেদ জানান, আমার কিংবা প্রধান শিক্ষকের প্রতিটি কক্ষের প্রশ্নপত্র এক এক করে চেক করা সম্ভব নয়। কক্ষ পরিদর্শনের সময়ও কোন পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেনি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পরীক্ষা কেন্দ্রের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুদুর রহমান মাসুদ এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল স্বীকার করে বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক এবং দিনাজপুর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলেছি। জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে ৩ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
পরীক্ষা পরিদর্শক চৌরংগী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিরউদ্দীন ও রত্নাই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেহেনা খানম এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।