কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জাল করে বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহার করার অভিযোগ এসেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আরিফ উদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে। এদিকে ভুয়া কাগজপত্রকে সঠিক মনে করে বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহারের আবেদনকে আমলে নিয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: মফিজুল ইসলাম এক লিখিত অভিযোগে দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য জানান। তার অভিযোগ, বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে এটা সম্ভব হয়েছে।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আরিফ উদ্দিন আহম্মেদ ২০১২ খ্রিস্টাব্দ থেকে কলেজে অনুপস্থিত থাকায় গভর্নিং বডি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর আরিফ উদ্দিন আহম্মেদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডে কাগজপত্রসহ আবেদন করা হয়।
কিন্তু যশোর শিক্ষা বোর্ড এক চিঠিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানায়, সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আরিফ উদ্দিন আহম্মেদের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করেছে বোর্ডের আপিল ও আরবিট্রেশন কমিটি। এমন চিঠিতে বিস্মিত হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগে জানানো হয়, যশোর বোর্ডের এ অনাপত্তি প্রাপ্তির পর ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে ২৩ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তিন দিন কলেজে এসেছেন এবং ২৩ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সবদিন উপস্থিতির স্বাক্ষর করেছেন আরিফ উদ্দিন আহম্মেদ।
গত ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ আগস্ট কলেজ গভর্নিং বডির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আরিফ উদ্দিন আহম্মেদ বোর্ডে বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহারের ভুয়া ও জাল কাগজপত্র দাখিল করেছেন। গত ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ নভেম্বর তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডে নির্ধারিত ফিসসহ অনলাইনে পুনরায় আবেদন করা হয়। কিন্তু সদ্য বিদায়ী যশোর শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অমল কুমার বিশ্বাস ডেপুটি কলেজ পরিদর্শক মদন মোহন বিষয়টি দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রেখেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘আরবিটিশন বোর্ড হওয়ার পরে আমাকে যশোর বোর্ডের আরবিটিশন বোর্ড থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে কলেজ পরিদর্শক স্বাক্ষরিত কাগজ দেয়া হয়। সে কাগজের ফটোকপি আমি কলেজ কর্তৃপক্ষ ও সভাপতির কাছে জমা দেই। এরপর আমি কলেজে যোগদান করি। এখানে এমপি সাহেবের কাছের কিছু অসাধু লোকজন মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। যারা বলছে জাল কাগজপত্র জমা দিয়েছি, তাদের জিজ্ঞেসা করুন যে তারিখে আরবিটিশন বোর্ডের সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই তারিখে আরবিটিশন বোর্ডে হয়েছিলো কি না? তৎকালীন সময়ের কলেজ পরিদর্শক অমল বিশ্বাসের কাছে বিষয়টি জানার চেষ্টা করুক। বোর্ড থেকে পাওয়া চিঠি আমি সভাপতির হাতে পৌছে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে যশোর শিক্ষাবোর্ডের তৎকালীন কলেজ পরিদর্শক (বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ওএসডি) অমল কুমার বিশ্বাস বলেন, আরবিটিশন বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাগজ পাঠানো হয়েছিল। যদি কলেজ কর্তৃপক্ষ মনে করে থাকেন ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করানো হয়েছে, তাহলে তারা আরবিটিশন বোর্ডে আবার বরখাস্তের আবেদন করতে পারবেন।