ভুয়া সনদে গ্রন্থাগারিক এমপিওভুক্ত, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

ভুয়া সনদে গ্রন্থাগারিক এমপিওভুক্ত, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি |

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে আঞ্জুমান আরা দীর্ঘ ৫ বছরের বেশি সময় ধরে ভুয়া সনদে চাকরি করছেন। এমপিও বাবদ সরকারি বেতন-ভাতা ও তুলেছেন তিনি। ভুয়া সনদের অভিযোগ করার পর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তা তদন্তের নির্দেশ দিলেও অজ্ঞাত কারণে তদন্ত হচ্ছে না। সাত কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও ৭ মাসেও তদন্ত না করে অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাহের আলীর বিরুদ্ধে। তবে, করোনার কারণে সুনির্দিষ্ট সময় তদন্ত সম্পন্ন করা যায়নি বলে দাবি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

অভিযোগকারী আইয়ূব আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি তথ্য প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করার পর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ২২ জানুয়ারি তারিখে লিখিত ভাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগের তদন্ত করার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা মতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও ৭ মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেননি। তদন্ত কর্মকর্তা চিলমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাহের আলী তদন্তের নামে অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন বলেও অভিযোগ তার।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ আছে, ওই পদে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে ভুয়া সনদে আঞ্জুমান আরা সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ দেয়ার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ছিলেন চিলমারী উপজেলা সাবেক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুল্লাহ ও সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর-ই ইসলাম।

তিনি অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, ‘মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাহের আলীকে বিষয়টি বার বার বলার পরও তিনি কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনিও ভুয়া সনদধারী ওই গ্রন্থাগারিকের কাছ থেকে ঘুষ বাবর টাকা নিয়ে চুপ করে আছেন।’ 

থানাহাটের স্থানীয়রা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভুয়া সনদে একজন এতদিন ধরে কীভাবে চাকরি করে সরকারি বেতন ভাতা ভোগ করছেন। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে নিরব কেন। বিষয়টির সুষ্ঠ তদন্ত করার জোর দাবি করছি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই স্কুলের একজন শিক্ষক বলেন, ‘ভুয়া সনদধারী আঞ্জুমান আরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ফলে কেউ কথা বলার সাহস পায় না।’

অভিযোগে জানা গেছে, সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর। এ পদের জন্য তিনি ডিপ্লোমা ইন লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স পাসের যে সনদপত্র জমা দেন তা ভুয়া। অর্থাৎ আঞ্জুমান আরা ডিপ্লোমা ইন লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স কোর্সে লেখাপড়া করেননি। তিনি যে সনদপত্র দাখিল করেছেন সেই সনদ প্রকৃতপক্ষে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আসাদ উল্লার কন্যা আঞ্জুমান আরার নামের একজনের। তার মাতার নাম নুরজাহান বেগম। কেবলমাত্র নামের মিল থাকার সুযোগ নিয়ে সুকৌশলে জালিয়াতির আশ্রয় নেন অভিযুক্ত সহকারী গ্রন্থাগারিক আঞ্জুমান আরা। 

এ প্রসঙ্গে থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘ভুয়া সনদের বিষয়ে অভিযোগ আমার কাছেও করা হয়েছে। আমি তো আর তাকে নিয়োগ দেইনি তাই এ বিষয়ে আমি ভালো বলতে পারব না। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আমি সব ধরনের সহযোগিতা করতে পারি।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চিলমারী উপজেলা মাধ্যমিক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তাহের আলী মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘করোনার কারণে তদন্ত করতে পারিনি। এখন তদন্ত করব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তের বিষয়ে কারো কাছে কোনো অর্থ গ্রহণ করিনি। দু’একদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’ 

তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ওই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেও এখনও সেই তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পায়নি। কেন দিচ্ছে না সেই বিষয় খোঁজ খবর নিচ্ছি। তদন্ত করে ভুয়া সনদপত্রের দিয়ে চাকরির বিষয়টি প্রমাণ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0098907947540283