রাজধানী ঢাকা এখন ভোট আমেজে আচ্ছন্ন। মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর কাছে নগরবাসী ভোটার হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পদপ্রার্থীরা প্রতীক পেয়েছে। ভোটারের মন জয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা নেমে পড়েছেন প্রচারে। চষে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লা। যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি, চাইছেন ভোট। সারা শহর ছেয়ে গেছে নৌকা, ধানের শীষসহ হরেক রকমের প্রতীকসংবলিত পোস্টার।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩০ জানুয়ারি। দুই সিটির সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে। রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় ঢাকার দুই সিটির এই ভোটকে রাজনৈতিক দলগুলো বড় নির্বাচন হিসেবেই মনে করে থাকে। এবারও সেটির ব্যতিক্রম হয়নি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পর আবার নৌকা ও ধানের শীষের ভোটের লড়াই নিয়ে আলোচনা মুখে মুখে। এরই মধ্যে শুরু হলো দুই প্রতীকের প্রচার-লড়াই।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রগুলো বলছে, ক্ষমতাসীন দলটি এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখছে। কারণ ভোট কারচুপি সংঘাত কিংবা বিতর্কিত কিছু হলে সরকারি দলই বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর এই নির্বাচনে হার হলে সেটি জনপ্রিয়তার নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করবে। যে কোনো মূল্যে জয় চাইছে আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে আগের অভিজ্ঞতায় এই নির্বাচন নিয়েও সংশয়ে আছে বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মামলা-হামলায় গেল বার নেতা-কর্মীরা মাঠে নামতে পারেননি। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তার মুক্তির আন্দোলনও দুর্বল। এখন সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে নামিয়ে চাঙা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি দল জবরদখল মনোভাব দেখালে সারা দেশে সরকারবিরোধী জনমত তৈরিতে সহায়ক হবে এই নির্বাচন।
নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে, নির্বাচনে মন্ত্রী-সাংসদেরা প্রচারে নামতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ নেতাই মন্ত্রী কিংবা সাংসদ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতা ও প্রার্থীরা সাংসদদের প্রচারে নামার সুযোগ প্রার্থনা করছেন। নির্বাচন কমিশনেও তারা এই দাবি জানাবেন। অন্যদিকে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের প্রচারে নামার ক্ষেত্রে আইনি বাধা নেই।