ভয়াবহ সেশনজটের শঙ্কা উচ্চশিক্ষায় - দৈনিকশিক্ষা

ভয়াবহ সেশনজটের শঙ্কা উচ্চশিক্ষায়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা ভাইরাসের দুর্যোগে উচ্চশিক্ষার স্তরে ভয়াবহ সেশনজট সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলার মধ্যেই করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়। তাই ক্যাম্পাস খোলার পরই এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পরবর্তী সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ওপর নির্ভর করছে সেশনজটের ভয়াবহতা। তবে সেশনজট কমানোর জন্য এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১০ জুন) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি ছয় মাস সেশনজট হয়, তবে এই ছয় মাসের সেশনজট কমাতে অন্তত দুই বছর সময় লাগবে। আর সেশনজট যদি এক বছর হয়, সেশনজটবিহীন ক্যাম্পাস পেতে সময় লাগবে অন্তত চার বছর। জানা গেছে, সেশনজট কমানোর জন্য এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে রাখার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে অনলাইনে ক্লাস পরিচালনার জন্য তাগিদ দেওয়া হলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খুব একটা সাড়া মিলছে না। যদিও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা পরবর্তী সেমিস্টারে ভর্তির কার্যক্রমও শুরু করেছে। তবে টিউশন ফি দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী এই স্তর থেকে ঝরে পড়বে বলে মনে করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অবশ্য সেশনজট থেকে মুক্ত হতে এখনই নানা উদ্যোগের কথা ভাবছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছুটির দিন যেমন শুক্র ও শনিবার ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হবে। অন্যান্য ছুটির দিনেও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখা হবে। প্রতিদিন নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি নেওয়া হবে বাড়তি ক্লাস বা পরীক্ষা। চার থেকে ছয় মাসের সেশনজটে পড়ার শঙ্কা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমরা চার থেকে ছয় মাসের সেশনজটের কবলে পড়তে পারি। তবে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্যান্য সময় অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’ বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইনে পাঠদানের সম্ভাবনা এবং সেশনজট মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি এবং সেশনজট দূর করতে বিভাগ ও ইনস্টিটিউটকে অনলাইনে পাঠদানের অনুরোধ করেছি। এখন তারাই এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ভয়াবহ সেশনজটের আশঙ্কা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য (প্রসাশন) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন বলেন, ‘ভিসিবিরোধী আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনই সেশনজট রয়েছে। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় সভাপতিদের সঙ্গে অনলাইনে ক্লাস চালুর ব্যাপারে আলোচনা করছি। তবে জরিপ চালিয়ে দেখেছি, ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী কোনোভাবেই অনলাইন ক্লাসে আগ্রহী নয়। তাই এই সংকটের সময়ের পরে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে ও সাপ্তাহিক ছুটি এক দিন কমিয়ে সেশনজট নিরসনের চেষ্টা করব বলে পরিকল্পনা করছি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান সেশনজট মোকাবিলায় শুক্র, শনি ও অন্যান্য ছুটির দিনেও ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানান। তবে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাসের পক্ষে নন তিনি। তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেটের গতির যে অবস্থা, তাতে সবাইকে অনলাইনে আনা সম্ভব নয়। কাউকে বাদ দিয়ে তো ক্লাস শেষ করা যাবে না। তাছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছেও ইন্টারনেট ও ডিভাইসের স্বল্পতা রয়েছে। তবে আমরা যেসব শিক্ষক ভালো বলতে পারেন, তাদের দিয়ে পাঠভিত্তিক ভিডিও তৈরি করে ভিডিওটা দিতে পারি। তাতে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীদের উপকার হবে। তবে এ বিষয়ে এখনো ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

এদিকে সেশনজট কমাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। আগামী ৫ জুলাই থেকে পরবর্তী সেমিস্টার শুরু হবে। ইউজিসির পক্ষ থেকে গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ফেরদৌস জামান বলেন, এখন পর্যন্ত ৬৬টি বেসরকারি ও ১৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আংশিক ও পুরোপুরি অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য বিভাগ ছাড়া অন্য কোনো বিভাগে খুব একটা অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে না বলে তিনি জানান।

রাজধানীর সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট হবে না। কারণ বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের তাগিদেই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036070346832275