ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর বোর্ডে না পাঠানোয় সকল শিক্ষার্থীকে গণহারে অকৃতকার্য দেখানোর প্রতিবাদে এবং দ্রুত স্থগিত ফলাফল প্রকাশের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মধুপুর বহুমুখী মডেল টেকনিক্যাল ইন্সস্টিটিউিটের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে মিছিল, অধ্যক্ষের বাসা ঘেরাও শেষে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা এ দাবিগুলো জানায়। পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার ৭ ট্রেড থেকে এসএসসি সমমানের পরীক্ষায় ১৫৮ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। গত ৭ মার্চ লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাস্টমেন্টের ওপর ৫০ নাম্বারে ব্যবহারিক পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা নাকি করোনার কারণে হয়নি। শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দীন, সানজিদা ও সিমু, সোমাইয়া জানান, দায়িত্বে থাকা সাত ট্রেডের ১৪ ইন্সপেক্টর ও ডেমোস্ট্রেটর কোনো ক্লাস বা ব্যবহারিক পরীক্ষা নেননি। লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সস্ট্রাক্টরা যথাসময়ে ব্যবহারিক নম্বরও বোর্ডে পাঠাননি। এর মধ্যে গত ৩১ মে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এসএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। ফলাফলে দেখা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানের সকল পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য।
এর প্রতিকার দাবি করে অভিভাবক আখতার হোসেন জানান, ছয় সপ্তাহের বাস্তব প্রশিক্ষণ কোর্স করানো হয়নি। ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া বা নাম্বার পাঠানোর কাজটিও তারা করেনি। অভিভাবকদের জানানো হয়েছিল করোনার কারণে কোনো ব্যবহারিক পরীক্ষার প্রয়োজন হবেনা। এখন প্রতিষ্ঠানের ভুলে অকৃতকার্য ছেলেমেয়েরা হতাশ হয়ে পড়ছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সাইফুল ইসলাম জানান, করোনা সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানে ছয় সপ্তাহের বাস্তব প্রশিক্ষণ ক্লাস হয়নি। বোর্ডের নির্দেশনা না থাকায় ট্রেড ইন্সট্রাক্টরগণ ব্যবহারিক নাম্বার না দিয়ে খাতা ক্লোজ করে বোর্ডে নম্বর পাঠায়। রেজাল্টের কয়দিন আগে বোর্ড নোটিশ দিয়ে হুট করে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর চেয়ে বসে। বোর্ড কন্ট্রোলারের সঙ্গে কথা বলে গত ২৪ মে ই-মেইলে শিক্ষার্থীদের গড় নম্বর পাঠানো হয়। কিন্তু বোর্ড সেটি আমলে না নিয়ে সকল পরীক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করে।
বিষয়টি সুরাহার আশাবাদ জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এবং মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরা বলেন, দায়িত্বে অবহেলার জন্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলামকে শোকজ করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।