মহান বিজয় দিবস আজ। বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জনের দিন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠেছিল বাংলার রক্তস্নাত শিশির ভেজা মাটি, অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরের নির্বিচার শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়। নয় মাসের জঠর-যন্ত্রণা শেষে এদিন জন্ম নেয় একটি নতুন দেশ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। প্রায় ৯২ হাজার পাকিস্তানি বাহিনী ঐতিহাসিক রোসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সূচিত হয়েছিল এই মাহেন্দ্রক্ষণ।
হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করে এইদিনই বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে এনেছিল লাল-সবুজের পতাকা। সাড়ে চার দশক পর এবার মহান বিজয় দিবসটি এসেছে ভিন্ন আবহে।
এছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে এবার মহান বিজয় দিবস পালন হচ্ছে। বিজয়ের এই মাসের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই এবারের বিজয় দিবসে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। বিজয়ের মাসের নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধীদের বর্জনের অঙ্গীকার থাকবে দেশবাসীর।
আজ প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের সূচনা হয়। সরকারি ছুটির দিন আজ। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নামে শহীদদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ জনতার ঢল। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিজয় মঞ্চ স্থাপন করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে থাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়।
রাষ্ট্রপতির বাণী
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দলমত নির্বিশেষে সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, আসুন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের এই উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করি। দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি। ২০১৮ সালের বিজয় দিবসে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
কর্মসূচি
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বেলা ৩টায় গণভবনে বিজয় দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিলিত হন। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।