সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ এর প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলে সরকারি কোটাবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। চুড়ান্ত ফলে দেখা গেছে, শতকরা ৬০ ভাগ মহিলা কোটা থাকলেও মহিলা শিক্ষকের চেয়ে বেশি সংখ্যক পুরুষ শিক্ষক নির্বাচিত করা হয়েছে। এনিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারি কোটা বিধি মানা হয়নি বলে যে সমালোচনা হচ্ছে তার প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিয়েছে অধিদপ্তর। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসম্পর্কে ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ এর চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। কিন্তু বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ফল প্রকাশে সরকারি কোটাবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি বলে অপপ্রচার চলছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমাল-২০১৩ বিধি ৭(ক) অনুযায়ী কোনো একটি উপজেলার মোট পদের ৬০ শতাংশ মহিলা, ২০ শতাংশ পোষ্য ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা নির্ধারিত থাকে। আবার বিধি ৭(খ) অনুযায়ী মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ এই তিন ধরণের প্রতিটি কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আবার ৪ ধরণের কোটা অনুসরণ করা হয়। এগুলো হলো এতিমখানা নিবাসী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ৩০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৫ শতাংশ এবং আনসার ও ভিডিপি সদস্য ১০ শতাংশ। মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ কোটায় এই চার ধরণের কোটা অনুসরণের পর প্রতিটিতে অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ মেধা কোটা থেকে পূরণ করার নিয়ম রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, কোটায় উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়া গেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিল জারি হওয়া স্মারক ও শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালার বিধি ৭(১)(খ) অনুযায়ী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মেধাক্রম থেকে পূরণ করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়, এবারের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিভিন্ন শ্রেণি কোটায় নির্বাচনযোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় শূন্যপদসমূহ সাধারণ প্রার্থীদের দ্বারা পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে মেধাক্রমানুসারে পূরণ করা হয়েছে। এ পক্রিয়ায় বিধিসম্মতভাবেই কিছু উপজেলায় নির্বাচিত পুরুষ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচিত মহিলা প্রার্থীর চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি হয়েছে।
অধিদপ্তরের দাবি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ এর প্রকাশিত চূড়ান্ত ফল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি সহায়তায় উন্নত সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মানবীয় হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ ছিল না। ব্যবহৃত সফটওয়্যারে সরকারি কোটাবিধি সঠিক ও যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে বিধায় প্রত্যেক প্রার্থী বিধি অনুযায়ী মূল্যায়িত হয়েছেন। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।