দীর্ঘ ১ বছরের প্রচেষ্টায় পাঙাশ ও সিলভার কার্প মাছ দিয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট ও চানাচুর উদ্ভাবন করেছেন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ফিশারিজ, একোয়াকালচার অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের একদল গবেষক। গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছেন ফিশিং অ্যান্ড পোস্ট হার্ভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক মো. মাসুদ রানা এবং তত্ত্বাবধান করেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব। সার্বিক সহযোগিতা করেন একোয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ এম সাহাবউদ্দিন এবং ফিশিং অ্যান্ড পোস্ট হার্ভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মহিবুল্লাহ।
গতকাল বুধবার শেকৃবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে পাঙাশ ও সিলভার কার্প মাছের উত্পাদনের হার বেশি; কিন্তু ভোক্তাদের চাহিদা ও বাজার দর দিনদিন কমতে থাকায় চাষিরা এই দুইটি মাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এদেরকে প্রক্রিয়াজাত করে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ বিস্কুট ও চানাচুর উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছি, যা একইসঙ্গে মানুষের দেহের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন ও মিনারেল সরবারহ করবে।
উদ্ভাবিত খাদ্য দুইটি যে কোনো সময় খাবার উপযোগী মোড়কজাত পণ্য হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে উত্পাদন সম্ভব। ফলে চাষি পর্যায়ে পাঙাশ ও সিলভার কার্প মাছ উত্পাদনে আগ্রহ বাড়বে। এই পণ্যগুলো শিশু ও গর্ভবতী নারীর পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
পুষ্টিগুণের ব্যাপারে গবেষকরা বলেন, ‘প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে মাছের বিস্কুট ও চানাচুরে প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ আমিষ, ২০-৩০ শতাংশ চর্বি, ২০-২৫ শতাংশ শর্করা, ১০-১৫ শতাংশ মিনারেল এবং ১০-১২ শতাংশ ফাইবার বিদ্যমান। অথচ সাধারণত বিস্কুট ও চানাচুরে ১৫-২০ শতাংশ আমিষ থাকে।’
ইতিমধ্যে গবেষকদল তাদের উদ্ভাবিত বিস্কুট ও চানাচুর শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ এবং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীবের কাছে হস্তান্তর করেছেন। উপাচার্য উদ্ভাবিত পণ্য দুইটির প্রশংসা করেন এবং গবেষণা পরিচালনায় সবরকমের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
গবেষক দলের প্রধান মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘এ ধরনের উদ্ভাবন অপেক্ষাকৃত কম দামের মাছের চাষিদের সঠিক মূল্য পেতে সহায়তা করবে এবং দেশের জনগণের আমিষ চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার প্রক্রিয়া চলমান। পণ্য দুইটি বাজারে নেওয়ার কাজ এগিয়ে চলছে।’