মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি |

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে নিবন্ধনপ্রাপ্ত বেসরকারি এতিমখানার শিশুদের প্রতিপালন, চিকিৎসা এবং শিক্ষা প্রদানের জন্য আর্থিক সহায়তার (ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট) বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক এতিমখানার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। নামে-বেনামে বরাদ্দ দিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমে এতিমখানার নামে অধ্যক্ষ হাতিয়ে নিচ্ছেন এতিমদের বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা। প্রতিবার বরাদ্দ দেওয়ার আগে সমাজসেবা অধিদপ্তরের বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করার কথা থাকলেও বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা গ্রামের 'ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায়' এতিমদের ভুয়া তালিকা করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ খালিদ-বিন-নাসের।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যলয় সূত্রে জানা যায়, ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানাটি সরকারিভাবে নিবন্ধিত। গভ. রেজি. নং ফরিদ ৫৭৭। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৩ এতিমের নামে দুই কিস্তিতে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪৩ এতিম শিশুর মধ্যে ২৬ জনের বাবা-মা জীবিত রয়েছেন। অনেকে জানে না এতিমখানার আবেদনে এতিমদের তালিকায় তাদের বাবা-মাকে মৃত দেখানো হয়েছে।

মো. আমীর হোসেনসহ ৯ জন গত ২৯ আগস্ট জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আমীর হোসেন জানান, ৪৩ সুবিধাপ্রাপ্ত এতিমের মধ্যে ২৬ জনের বাবা-মা জীবিত, যা প্রমাণপত্রসহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগকারীরা আরও জানান, তারা জানতে পেরেছেন, জেলা সমাজসেবা অফিস থেকে উপজেলা সমাজসেবা অফিসকে বিষয়টি তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে। এতিমদের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছেন, তাদের দিয়ে তদন্ত করা হলে সুষ্ঠু তদন্ত হবে না।

তালিকার ১০ নম্বর এতিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের ওমর আলীর বাবা আমিনুর শেখ জানান, এ বিষয়টি তারা আগে জানতেন না। কিছু দিন হলো জানতে পেরেছেন যে, তাদের মৃত দেখিয়ে টাকা উত্তলোন করে খাওয়া হচ্ছে। মাদরাসার হুজুরসহ অনেকে বলছেন এটা না করলে সরকার থেকে সাহায্য আসে না। এমনকি তার কাছ থেকে প্রতি মাসে মাদরাসার বডিং খরচ বাবদ এক হাজার টাকা করে নেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।

তালিকার ৪১ নম্বর এতিম ডোবরা গ্রামের তাসলিম শেখের দাদা ছীরু শেখ জানান, তার ছেলে রবিউল শেখ ও পুত্রবধূ রূপালী বেগম জীবিত রয়েছে। তার নাতিকে মাদরাসায় পড়তে পাঠিয়েছেন। তাকে এতিম দেখিয়ে যারা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে এতিমখানার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নূর ইসলাম মোল্যা জানান, মাদরাসার অধ্যক্ষ দেশের বাইরে থাকা অবস্থায় একজন শিক্ষক ভুলক্রমে এটি করে ফেলেছেন। এটার সংশোধিত তালিকা সমাজসেবা অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। মাদরাসার বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের কথা সত্য নয়। এই টাকা কারও নামে আসে না। প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করার জন্য কিছু লোক এসব করছে।

এতিমখানা ও মাদরাসার অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ খালিদ-বিন নাসের জানান, যে সময় তালিকাটি দেওয়া হয় তখন তিনি দেশে ছিলেন না, হজ করতে সৌদি আরবে ছিলেন। ওই সময় তাড়াহুড়া করে একজন শিক্ষক ভুলক্রমে এটি করে ফেলেছেন, এটার সংশোধিত তালিকা সমাজসেবা অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। একটি চক্র মাদরাসার (ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট) ক্ষতি করার জন্য এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে।

বোয়ালমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাস জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে তদন্ত করতে দিয়েছে। তিনি এখনও তদন্ত করেননি, তদন্ত করে বলতে পারবেন। শিগগির এ ব্যাপারে তদন্ত করবেন।

সাতৈর ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মজিবর রহমান জানান, এলাকাবাসী সূত্রে বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন, যা ডোবরা দরবার শরিফের সম্মানকে ক্ষুণ্ণ করেছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্তপূর্বক এতিমদের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন তিনি।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066239833831787