সারাদেশের সাড়ে সাত হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত মাদরাসার দেড় লাখ শিক্ষক কর্মচারীর এমপিও দিতে আলাদা একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। ‘মাদরাসা এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ বা ‘মেমিস’ নামে এ সফটওয়্যারটি প্রস্তুত। চলতি মাস থেকেই নতুন সফটওয়্যারে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিও দেয়ার কাজ শুরু হবে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এখন থেকে এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে নতুন শিক্ষকদেরও এমপিওভুক্ত করা হবে।
প্রচলিত নিয়মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ‘ইএমআইএস’ সেলের মাধ্যমে স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের সাথে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিও প্রক্রিয়া করা হতো। তাই মাদরাসা শিক্ষকদের আলাদা এমপিও দিতে ‘মাদরাসা এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ বা ‘মেমিস’ সফটওয়্যারটি তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। গত বছরের শেষভাগ থেকেই এ সফটওয়্যার তৈরির কাজ শুরু হয়। সফটওয়্যার তৈরি ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ শেষে চলতি সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ সফটওয়্যারে কাজ শুরু হচ্ছে।
‘মেমিস’ সফটওয়্যারে নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এমপিও আবেদন প্রক্রিয়া করার প্রস্তুতি হিসেবে সারাদেশের সাড়ে সাত হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত মাদরাসার দেড় লাখ শিক্ষক কর্মচারীর তথ্য ‘ইএমআইএস’ থেকে নতুন সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্তির কাজ চলছে। তাই, চলতি মাসের এমপিও আবেদনগুলো ইএমআইএস সেলে না পাঠাতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপপরিচালকদের মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে, আক্টোবর মাস থেকে এ আবেদন সরাসরি ‘মেমিস’সফটওয়্যারে পাঠাতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা জারি করা হবে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, গত ২ সেপ্টেম্বর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপপরিচালকদের নিয়ে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপপরিচালকদের মৌখিকভাবে ‘মেমিস’ সফটওয়্যারের বিষয়ে জানানো হয়েছে। ডিডি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের ‘মেমিস’ সফটওয়্যারে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। রেজিস্ট্রেশন করে আগামী অক্টোবর মাস থেকে নতুন শিক্ষকদের এমপিও আবেদন সরাসরি মেমিসে পাঠাবেন কর্মকর্তারা। তাই, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ইএমআইএস সেলে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিও আবেদন পাঠাতে নিষেধ করা হয়েছে।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সারাদেশের সাড়ে সাত হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত মাদরাসার দেড় লাখ শিক্ষক কর্মচারীর এমপিও সংক্রান্ত সব তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সফটওয়্যারে সংরক্ষিত রয়েছে। তাই, শিক্ষকদের বেতন, বোনাস, ইনক্রিমেন্টসহ সব কিছু হিসেব করতে শিক্ষা অধিদপ্তরের ওপর নির্ভরশীল মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতেই আলাদা সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। সফটওয়্যার প্রস্তুত। জনবল নিয়োগ সম্পন্ন। তাই, চলতি সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ সফটওয়্যারে কাজ শুরু হবে।
এ কর্মকর্তা আরও জানান, গত আগস্ট মাসের শুরুতে ইএমআইএস সেলের কাছে তথ্য চায় মাদারাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। একমাস পর চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে এসব তথ্য আসা শুরু হয়েছে। এসব তথ্য এখন মেমিসে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ চলছে।
মাদরাসা শিক্ষকদের নতুন আবেদন সেপ্টেম্বর মাসে না পাঠানোর বিষয়ে তিনি দৈনিকশিক্ষাডটকমকে জানান, তথ্য অন্তর্ভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ইএমআইএস থেকে তথ্য মেমিসে আসছে। দুইটি সফরওয়্যারের তথ্য আলাদা ফরমেটে থাকে। ইএমআইএস থেকে আসা তথ্য প্রক্রিয়া করে মেমিসে অন্তর্ভুক্ত করার উপযোগী করে তারপর নতুন সফটওয়্যারে ইনপুট করতে হবে। এখন ইএমআইএসে নতুন তথ্য ঢুকতে থাকলে তথ্য আনার প্রক্রিয়া অনেক জটিল হয়ে পড়বে। তাই, চলতি মাসে নতুন মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিও আবেদনগুলো ইএমআইএস সেলে না পাঠাতে ডিডি ও ডিইওদের মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডিডি-ডিইওরা মেমিস সফটওয়্যারে নিবন্ধিত হয়ে আগামী অক্টোবর মাস থেকে সরাসরি মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে এমপিও আবেদন পাঠাবেন।