মাদরাসা সুপারের সাথে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে টিসি - দৈনিকশিক্ষা

মাদরাসা সুপারের সাথে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে টিসি

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি |

মাদরাসা সুপারের সাথে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় দশম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তারকে মাদরাসা থেকে টিসি দেয়া হয়েছ বলে অভিযোগ উঠেছে। ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাহিরন নেছা দাখিল মাদরাসার সুপার মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা। বিনাদোষে ছাত্রীকে টিসি দেয়ায় সুপারের অপসারণের দাবি জানিয়েছে মাদরাসার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) মাদরাসা প্রাঙ্গণে এ দাবি অনশন করে তারা। 

ভুক্তভোগী মাদরাসাছাত্রী ফারজানা আক্তার উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি গ্রামের লুৎফার রহমানের মেয়ে। সে মাহিরন নেছা দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা লিখিত অভিযোগে বলেন, মাদরাসা সুপার আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন সময় আসা যাওয়া করতো। শিক্ষক বলে আমরা তাকে যথেষ্ট আদর-আপ্যায়নও করতাম। এক পর্যায়ে মাদরাসা সুপার মিজানুর রহমানের এক ভাতিজা পাশ্ববর্তী ছাগলদী গ্রামের আব্দুল জলিল তালুকদারের ছেলে মো. কামাল তালুকদারের সাথে আমার মেয়ে ফারজানা আক্তারের বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পারিবারিকভাবে আমরা মাদরাসা সুপারের মাধ্যমে বিবাহও দেই ঐ ছেলের সাথে। পরে পারিবারিকভাবে বনিবনা না হওয়ায় অল্প দিনেই বিয়ে ভেঙ্গে যায়। পরবর্তী সময়ে আমার মেয়ে আবার মাদরাসায় পড়ালেখা করতে চাইলে আমরা তাকে পুনরায় মাদরাসায় ভর্তি করি। কিন্তু মাদরাসা সুপার আমাদের বাড়িতে আবার একদিন এসে বলে আপনার মেয়ের তো একবার বিয়ে হয়েছে এখন আর পড়ালেখা করে কি হবে। আমার সাথে বিয়ে দেন আমার গ্রামের বাড়িতে ওকে নিয়ে সংসার করবো। আমরা এবং আমার মেয়ে ফারজানা রাজি না হলে কয়েকদিন পর আমার মেয়েকে টিসি দিয়ে মাদরাসা থেকে বের করে দেয়।

মাদরাসাছাত্রী ফারজানা বলেন, তিনি আমার বাবার বয়সী কি করে তাকে বিয়ে করবো। পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দেয়ার আগে আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে বার বার তার সাথে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার ক্ষমতা বলে আমাকে টিসি দিয়ে মাদরাসা থেকে বের করে দিয়েছে। 

স্থানীয়রা জানিয়েছে মাদরাসা সুপার মিজানুর রহমানের আগের দুটি স্ত্রী রয়েছে। তিনি মেয়ের বয়সী ছাত্রীকে বিয়ে করতে চান। আর তা না পেরে প্রতিহিংসার বশে এই কাজ করেছে। আমরা এই সুপারের অপসারণ চেয়ে বিচার দাবি করছি। 

তবে, মাদরাসা সুপার মো. মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি তার বিবাহ দেই নাই। কারণ তার বিয়ের বয়স হয়নি। ঐ ছাত্রী ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের দাখিল পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আর মাদরাসায় আসেনি। আমার এক শিক্ষক না বুঝে তাকে পুনরায় ভর্তি করেছে। সে বাল্যবিবাহে আবদ্ধ হয়ে মাদরাসার নিয়ম ভঙ্গের কারণে তাকে আমি টিসি দিয়েছি। তা ছাড়া সে এখন আমাদের মাদরাসার ছাত্রী নয়। 

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মাঝারদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হামিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এর পিছনে অনেক কাহিনী আছে। যা ফোনে বলা যাবে না।’

সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। 

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0099208354949951