গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নানা প্রলোভনে ধর্ষণের পর ৭ম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রী অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ঘটনাটি প্রকাশ পেলে ভুক্তভোগীর বাবার দায়ের করা মামলায় ধর্ষক ও তার সহযোগী এক নার্সকে গ্রেফতার করেছে কাপাসিয়া থানা পুলিশ।
গ্রেফতার মিয়ার উদ্দিন (৬০) স্থানীয় নলগাঁও (বুরুজপাড়া) এলাকার কাদির মোল্লার ছেলে ও ডেকোরেটর ব্যবসায়ী। অপরদিকে নার্স নুরুন্নাহার (৩২) কাপাসিয়া বাজারের সাফা মারওয়া হাসপাতাল কাজ করেন। তারা দুইজনই কারাগারে রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা একজন অটোরিকশা চালক। দীর্ঘদিন অসুস্থ হওয়ার পর শয্যাশায়ী অবস্থায় তার স্ত্রী গত রমজানে মারা গেছেন। তার চার মেয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী ছাত্রী সবার ছোট। ১৪ বছর বয়সী ছোট মেয়েটি স্থানীয় একটি মাদরাসার ৭ম শ্রেণি ছাত্রী।
মামলার বাদী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মিয়ার উদ্দিন তারই চাচাতো ভাই। বিভিন্ন সময় নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার কিশোরী মেয়েকে গত ২৫ এপ্রিল বাড়ির পাশের ফোরকানানিয়া মাদরাসার একটি কক্ষে জোর করে ধর্ষণ করে। পরে একাধিকবার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে সে। লোক লজ্জার ভয়ে মেয়েটি ধর্ষণের ঘটনা চেপে রাখে। ১০/১২দিন ধরে ঘন ঘন বমি শুরু হলে কিশোরী তার বড় বোনের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। ইতোমধ্যে কিশোরী মেয়েটি দুই মাসের অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
পরে স্বজনরা মিয়ার উদ্দিনের বাড়ি গিয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে। পরে মেয়েসহ মিয়ার উদ্দিনকে চাপ দিলে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে সে। সম্মানহানীর ভয় দেখিয়ে এক পর্যায়ে মিয়ার উদ্দিনের স্ত্রী হোসনে আরা ২০ হাজার টাকা দিয়ে স্থানীয় কাপাসিয়া বাজারের সাফা মারওয়া হাসপাতালে গর্ভপাত করার জন্য প্রস্তাব দেয়। পরে ২৫ জুন সকালে মিয়ার উদ্দিন, তার সহযোগী স্থানীয় আ. রাজ্জাক, মফিজউদ্দিন ও মিলন মোল্লা মেয়েকে কৌশলে হাসপাতালের পাশে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে কর্মরত ও ধর্ষকের অজ্ঞাত ৩/৪ সহযোগী তার মেয়ের গর্ভপাত ঘটায়।
ঘটনাটি নিয়ে আত্মীয় স্বজনদের ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দেরি হওয়ায় গত ২ জুলাই কাপাসিয়া থানায় মামলা করা হয়। বর্তমানে মামলাটি তুলে ফেলার জন্য আসামিরা নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে জানান তিনি।
কাপাসিয়া থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মামলার পর পলাতক মিয়ার উদ্দিন গত ৬ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ৮ জুলাই ওই হাসপাতালের গর্ভপাতকারী নার্স নুরুন্নাহারকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার দুইজনকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।