মাদরাসার চিহ্ন নেই তবু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ - দৈনিকশিক্ষা

মাদরাসার চিহ্ন নেই তবু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ

বরিশাল প্রতিনিধি |

এবতেদায়ি মাদরাসা কোন চিহ্ন না থাকলেও দুই বছর যাবত মাদরাসা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কাগজ-কলমে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও বাস্তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন চিহ্ন নেই। এমনকি শিক্ষাদানের জন্য টেবিল, চেয়ার কিংবা পাঠদানের কোন উপকরণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ জালিয়াতির বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পরীক্ষা শেষ হওয়ার একদিন আগে (শনিবার থেকে) টিন দিয়ে মাদরাসা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের যাচাই-বাছাই ছাড়াই এবং কোন রকম পাঠদান কিংবা মাদরাসা ভবন না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা কিভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাটি বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ চর উত্তর ভূতেরদিয়া এলাকার। রবিবার দুপুরে সরেজমিনে ঠাকুরমল্লিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, কাগজ-কলমে দেখানো দক্ষিণ চর উত্তর ভূতেরদিয়া মসজিদ সংলগ্ন এবতেদায়ি মাদরাসা থেকে সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ১৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে চারজন অনুপস্থিত রয়েছে।

পরীক্ষার্থীরা হলো-মোঃ ইউনুস, রোল-৫৭, সিয়াম, রোল-৫৯, আব্দুল হক, রোল-৬১, মোঃ আহাদ, রোল-৬২, তহুরা, রোল-৬৩, সাদিয়া, রোল-৬৪, লামিয়া, রোল-৬৫, আফসানা, রোল-৬৬, বুশরা, রোল-৬৭, মরিয়ম, রোল-৬৮, সীমা, রোল-৭০, রুমা, রোল-৭১, মিতু, রোল-৭৩। এরমধ্যে মোঃ নাইম, রোল-৫৮, মোঃ ফয়েজ, রোল-৬০, মারুফা, রোল-৬৯, ফারজানা, রোল-৭২ নামের চার পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত।

ওই গ্রামের ছত্তার হাওলাদারের পুত্র আলিম হোসেন পনুসহ স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, দক্ষিণ চর উত্তর ভূতেরদিয়া মসজিদ সংলগ্ন এবতেদায়ী মাদরাসার দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম নেই। কোনদিন তারা ওই মাদরাসার ক্লাস নিতেও দেখেননি। কিন্তু স্থানীয় রহমান ফরাজী (কাজী) নামের এক লোক কাগজ-কলমে মাদরাসা দেখিয়ে অন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ওই মাদ্রাসার নামে রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে মাদরাসা সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করিয়েছে।

বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতারাতি রহমান ফরাজীর বাড়ির পাশে টিন দিয়ে মাদরাসা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। সূত্রে আরও জানা গেছে, কাগজ-কলমে মাদরাসায় পাঁচজন শিক্ষকের কথা উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে স্থানীয়রা কোনদিন মাদরাসায় ক্লাস হয়েছে বা কোন শিক্ষক ক্লাস নিয়েছেন তা তারা দেখেননি।

বর্তমানে মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত করণের জন্য রহমান ফরাজী উঠে পড়ে লেগেছেন। এ জন্য জালিয়াতির মাধ্যমে অন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ওই মাদরাসার নামে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে মাদরাসা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছে।

পুরো অভিযোগ অস্বীকার করে রহমান ফরাজী (কাজী) জানান, ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে দক্ষিণ চর উত্তর ভূতেরদিয়া মসজিদ সংলগ্ন এবতেদায়ি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাবে  তিনি (রহমান ফরাজী) মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে  মাদরাসাটি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ায় একই মৌজার তার (রহমান) বাড়ি সংলগ্ন মাদরাসায় জমি দেয়া হয়।

এরপর বাঁশখুঁটি দিয়ে মাদরাসা নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু মাদরাসাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় মসজিদের ভেতর ক্লাস নেয়া হচ্ছে। সব পরীক্ষার্থী তার মাদরাসার ছাত্র বলেও তিনি দাবি করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকবর কবির জানান, প্রতিষ্ঠান না থাকলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কোন সুযোগ নেই। তিনি আরও জানান, বিষয়টি তার জানা ছিল না। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036900043487549