জামায়াত কানেশনসহ নানা অনিয়মে জড়িত বিতর্কিত মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: বিল্লাল হোসেনকে অপসারণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সরকার মাদরাসা শিক্ষার উন্নতিকল্পে ও শিক্ষকদের ভোগান্তি কমানোর লক্ষ্যে আলাদা অধিদপ্তর করলেও ডিজি বিল্লালের স্বেচ্ছাচারিতায় সেই উদ্দেশ্য ব্যহত হয়েছে। অধিদপ্তরের বিএনপিপন্থি পরিচালক ড. মোহাম্মদ ছরোয়ার আলমকে সব মাদ্রাসায় নিয়োগ বোর্ডে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়ে কাড়ি কাড়ি টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এগারো হাজারের বেশি আলিয়া ধারার মাদ্রাসায় নিয়োগ ও এমপিওভুক্তিসহ যাবতীয় বিষয় দেখভাল করার দায়িত্ব মাদ্রাসা অধিদপ্তরের।
জামাতে ইসলামী নেতা ও একটি হত্যা মামলার আসামী কামাল উদ্দিন জাফরীর সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: বিল্লাল হোসেন গত ২৮ মে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকার রেডক্রিসেন্ট বোরাক টাওয়ারে অবস্থিত অধিদপ্তরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। জাফরি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীর বিয়াই।
আরও পড়ুন: মাদ্রাসা অধিদপ্তর ভোগান্তি বাড়িয়েছে : স্বাশিপ-মোদার্রেছিনের সাক্ষ্য
জানা যায়, বিল্লাল হোসেন বি সি এস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। তার বর্তমান পদ যুগ্ম-সচিব। তার ব্যাচের অধিকাংশ কর্মকর্তা সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হলেও নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়নি বলে জানা যায়। প্রায় চার বছর যাবত বিল্লাল হোসেন নব্গঠিত মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে রয়েছেন। অধিদপপ্তরের ওয়েবসাইটে তার নিজের কোনো সুষ্পষ্ট ছবি আপলোড করেন না। মাদ্রাসায় নিয়োগবোর্ডে দুর্নীতিবাজদের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেয়া ও নিয়মিত এমপিওর (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) চেক ছাড় করতে না পারাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: জামাত নেতা জাফরির সঙ্গে মহাপরিচালকের গোপন বৈঠক
গত ২৮ মে দৈনিক শিক্ষায় ‘জামাত নেতা জাফরির সঙ্গে মহাপরিচালকের গোপন বৈঠক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই তোলপাড় শুরু হয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।
বিল্লাল হোসেনের বিতর্কিত কার্যকলাপের অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি গত ২ জুন তদন্ত কমিটি সাক্ষ্য নেন মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। প্রথমদিন রাজধানীর ইস্কাটনে বোরাক টাওয়ারে অবস্থিত মাদসারা শিক্ষা অধিদপ্তরে সাক্ষ্য নিলেও পরের দিন ৪ জুন সচিবালয়ের পরিবহনপুলে মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগে শিক্ষক নেতাদের সাক্ষ্য নেয়া হয়। মাদরাসা অধিদপ্তরের জামায়াতীকরণ ও অনিয়মের অভিযোগ তোলা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা। শিক্ষক নেতারা লিখিতভাবে কমিটির কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।