পঞ্চগড় পৌর এলাকার একটি মাদরাসার নড়বড়ে সীমানাপ্রাচীরের ধস ঠেকাতে বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছে। তার পরও যে কোনো সময় দেয়ালটি ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় লোকজন। নড়বড়ে দেয়ালটির ধস ঠেকানোর চেষ্টায় বাঁশের খুঁটি লাগানোর ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি সবার নজরে আসে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত এই দেয়ালটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের দাবি তুলেছে।
পঞ্চগড় পৌরসভার কাগজিয়াপাড়া এলাকার কাগজিয়াপাড়া দাখিল মাদরাসাটি স্থাপিত হয় ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে। এমপিওভুক্ত হয় ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে। শুরু থেকে অবকাঠামোগত সমস্যায় ভুগছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি নিজস্ব অর্থায়নে এক লাখ টাকা খরচে প্রায় একশ মিটার লম্বা সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে মাত্র দুই দিনেই এক শ মিটার লম্বা ওই সীমানাপ্রাচীরটি তৈরি করা হয়। সে কারণে ১০ বছর পার না হতেই দেয়ালটি কোথাও হেলে পড়েছে আবার কোথাও ইট খসে পড়েছে।
এর মধ্যে গত ২৯ জুলাই জেলা শহরের পঞ্চগড়-১ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফুলের বাগানের প্রাচীর ধসে নীলা আক্তার নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী নিহত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। গত ৩ আগস্ট মাদরাসার আহ্বায়ক কমিটি জরুরি সভা করে নড়বড়ে সীমানাপ্রাচীরের দুই পাশে বাঁশের খুঁটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী, দেয়ালের দুই পাশে বাঁশের খুঁটি বেঁধে দেয়া হয়।
বাঁশের খুঁটি দিয়ে দেয়াল ধস ঠেকানোর চেষ্টার ভিডিও আল আমিন নামের পঞ্চগড়ের এক সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগেই বিদ্যালয়ের দেয়াল ধসে স্কুলছাত্রী নিহত হয়েছে। আমরা চাই আর যেন কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে এভাবে প্রাণ দিতে না হয়। তাই বিষয়টি শেয়ার করেছি।’
ওই মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্র তুষার ইমরান বলে, দিন দিন মাদরাসার সীমানাপ্রাচীরটি আরও নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। দেয়ালের কাছ দিয়ে গেলেই এখন ভয় লাগে, কখন যেন পড়ে যায়।
দেয়ালের বিষয়ে মাদরাসার সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘অর্থের সংকুলান না হওয়ায় দেয়ালটি ভেঙে নতুন দেয়াল নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তাই আহ্বায়ক কমিটির সিদ্ধান্ত মতে নিরাপত্তার স্বার্থে তাৎক্ষণিক বাঁশের খুঁটি দেয়া হয়েছে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে। সেই সঙ্গে সবাইকে ঝুঁকিপূর্ণ দেয়ালটির বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সীমানাপ্রাচীরের কাছে যেতে নিষেধ করেছি।’