সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার গোন্তা আলিম মাদরাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সম্প্রতি তাড়াশ সহকারী জজ আদালতে মামলাটি করেন ওই পদে আবেদনকারী এক প্রার্থী। মামলায় গোন্তা আলিম মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি, অধ্যক্ষসহ মোট ১১ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার নথি সূত্রে জানা, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মে নিম্ন সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে গোন্তা গ্রামের মৃত পান্নাউল্লা মিয়ার ছেলে আব্দুল মালেককে যোগদান করান অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান। কিন্তু বেতন না হওয়ায় দীর্ঘ ৭ বছর পর আবার নতুন করে ওই পদে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি দেখে অনেকেই আবেদন করলেও ওই পদে কোন পরীক্ষা ছাড়াই গত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২ আগস্ট অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে দ্বিতীয়বার নিয়োগ দেয়া হয় আব্দুল মালেককে। এ কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়ায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে আবেদনকারী আরমান সরকার বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে।
মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী এবং ২০২০-২১ অর্থ বছরে উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার ও গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগের জন্য গত ৪ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে ১৫ দিন পর নিরাপত্তা কর্মী পদে ৫ জন, আয়া পদে ৪ জন, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে ১৫ জন, উপাধ্যক্ষ পদে ১ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১ জন আবেদন করে। তবে, গ্রন্থাগারিক পদে কেউ আবেদন করে নাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান নিজের স্বার্থ চরিতার্থে সুবিধা মত নিয়োগ দিতে পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে অধ্যক্ষের মেয়ের জামাই আলমাছ মাহমুদ অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে আবেদন করে। আলমাছ আলিম পাস করার পর আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেনি। দীর্ঘ দিন ধরে সে ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। দারুল আহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেনা সার্টিফিকেট নিয়ে সে গ্রন্থাগারিক পদে আবেদন করেছে।
মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তবে, এমপিওভুক্ত না হওয়ায় নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে শুধু। নতুন করে আর নিয়োগ দেয়া হয়নি।
মাদরাসার সভাপতি মো. আবুল বাসার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়োগটি আপাতত বন্ধ আছে। আমি আর এ বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফকির জাকির দৈনিক শিক্ষডটকমকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।