মাদরাসায় পাসের হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। চলতি বছর পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৩ শতাংশ ভাগ। যা গত বছর ছিল ৭০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। জিপিএ ফাইভের সংখ্যাও বেড়েছে। চলতি বছর পেয়েছে ছয় হাজার ২৮৭ জন। যা গত বছর ছিল তিন হাজার ৩৭১ জন। হঠাৎ এত ভালো ফলের কোনো যুক্তি খুঁজে পান না মাদরাসা শিক্ষা বিশারদ ও বিশ্লেষকরা।
জানা যায়, মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম ছায়েফ উল্যাহ বেসরকারি কলেজ থেকে জাতীয়করণ হয়ে আত্তীকৃত হওয়া শিক্ষক। শিক্ষাজীবনে রয়েছে তৃতীয় বিভাগ। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রভাষক থাকাকালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রোটোকল অফিসার নিযুক্ত হন চেয়ারম্যান। এরপর তর তর করে সহযোগী অধ্যাপক হয়ে মাদরাসা বোর্ডের রেজিষ্ট্রার পদ বাগান। কিছুদিনের মধ্যে চেয়ারম্যান অবসরে গেলে চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও থাকেন ছায়েফ উল্যাহ। এরপর হঠাৎ তিনি চেয়ারম্যানের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পান। সেই থেকে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন তিনি। ফিডার পূর্ণ না করেই অধ্যাপক হওয়া, মাদরাসার পাঠ্যবই সরকারের সুপারিশ অনুযায়ী পরিবর্তন না আনা, কেনাকাটায় দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, জামায়াতপন্থি লেখকদের দিয়ে মাদরাসার পাঠ্যবই লেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে সম্প্রতি তোপের মুখে পড়েন ছায়েফ উল্যাহ। বার বার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও মাদরাসার পাঠ্যবই থেকে জামায়াতি উপাদান না সরানোয় ইসলামি ফাউন্ডেশন মহাপরিচালকের তোপের মুখে পড়েন ছায়েফ উল্যাহ।
গত ১ এপিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলের সামনেই মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে কড়া কথা শোনান ইসলামি ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক বিচারপতি সামীম মোহাম্মদ আফজাল। মাদরাসার কারিকুলাম রিভিউয়ের জন্য শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী কর্মশালার শুরুর দিনে এনসিটিবি থেকে লাল গালিচা ও রাজকীয় চেয়ার নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি চেয়ারম্যান ছায়েফ উল্যাহ। খবর বিশ্বস্ত সূত্রের।
জানা যায়, এনসিটিবিতে কর্মশালার শুরুতে ইসলামি ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মাদরাসা বোর্ড চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘২০১৪, ও ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে মাদরাসার বইগুলো থেকে জামায়াতি উপাদান সরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর লিখিত নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি চেয়ারম্যান। বইগুলোর লেখকদের মধ্যে অধিকাংশই জামায়াতপন্থি। কোনো কথাই শোনেন না মাদরাসার চেয়ারম্যান।’ এ সময় মাদরাসা বোর্ড চেয়ারম্যানকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখা যায়।
গত ২৪ মার্চ মাদরাসা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রেজিষ্ট্রার পদে নতুন মুখ এসেছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর নাহিদের সাথে ভালো যোগাযোগ থাকা চেয়ারম্যান ছায়েফ উল্যাহ প্রায় ছয় বছর যাবত মাদরাসা বোর্ডে রয়েছেন। আরও থাকার ইচ্ছা রয়েছে তার। বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য জানিয়েছে।