প্রশ্নপত্র ছাপানো থেকে শুরু করে কেন্দ্রে পৌছানো কার্যক্রমে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের গোমর ফাঁস হয়েছে। ভুল করে প্রশ্ন না ছাপা, নিয়ম ভেঙ্গে পাবলিক বাসে প্রশ্নপত্র পরিবহনকে নিয়মে পরিণত করেছে এ প্রতিষ্ঠানটি। আর এ অনিয়মকে অভিনব কৌশল হিসেবে দাবি করছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান। ট্রাক ও পুলিশ না পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসকদের দায়ী করেছেন চেয়ারম্যান।
নিয়মানুযায়ী ঢাকার বিজি প্রেস থেকে জেলা প্রশাসকদের তত্ত্বাবধানে আলাদা পরিবহনে করে ট্রেজারিতে প্রশ্ন পাঠাতে হবে। কিন্তু মাদ্রাসা বোর্ড তা মানেনি।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে সরকার যখন বিজিপ্রেস থেকে কঠোর নিরাপত্তায় প্রশ্ন পরিবহন, ট্রেজারিতে পাঠানোসহ নানামুখি পদক্ষেপ ও কড়াকড়ি আরোপ করছে ঠিক তখনই মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এক অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটিয়েছে। গত রোববার (১৫ এপ্রিল) রাত সোয়া এগারোটার দিকে রাজধানীর কল্যানপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে একটি গণপরিবহনে চলতি এইচএসসি সমমানের আলিম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাঠানো হয় ৩টি জেলায়। রংপুর, কুড়িগ্রাম, ও টাঙ্গাইল এই তিন জেলার প্রশ্নপত্র ঢাকা থেকে রংপুরে নিয়ে যান মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের দুই কর্মকর্তা। এসময় তাদের সঙ্গে ছিল না আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো সদস্য। ভুল করে যথাসময়ে উচ্চতর গণিতের প্রশ্ন ছাপায়নি মাদ্রাসা বোর্ড। তাই তড়িঘড়ি করে বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ছাপিয়ে কোনও রকম নিরাপত্তা ছাড়াই কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
পাবলিক বাসে প্রশ্নপত্র পরিবহনের সময় মাদ্রাসা বোর্ড ওই দুই কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে জানতে চাইলেন তারা বলেন, ব্যাগে কি আছে তা তারা জানেন না। তারা যে বাসে ছিলেন সেটি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রংপুর পৌছায়। প্রশ্নের ব্যাগ নিয়ে ওই দুই কর্মকর্তা রংপুর শহরের কিছু আগেই শাপলা চত্ত্বর নেমে যান। ওইদিন রংপুর প্রশাসন থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বোর্ডের দুই কর্মকর্তা বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে প্রশ্নপত্র জমা দিয়ে গেছেন। মধ্যবর্তী ৪ ঘন্টা এই দুই কর্মকর্তা অজ্ঞাত স্থানে ছিলেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের উপপরিদর্শক মো: হোসেন বলেন,ভুলে প্রশ্নপত্র না ছাপানোর কারণে তড়িঘড়ি করে বিজি প্রেসে ছাপিয়ে পাবলিক বাসে করে দুটি আলাদা ব্যাগে নিয়ে যাওয়া হয় আলিম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র।
প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এতো ব্যবস্থার গ্রহণের পরও কেন আলিম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাবলিক বাসে করে নিয়ে যাওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান এ.কে.এম ছায়েফ উল্যা সাংবাদিকদের বলেন, এটা তাদের একটি অভিনব কৌশল। কম প্রশ্নপত্র থাকার কারণে গণপরিবহনে পাঠানো হয় বলে চেয়ারম্যানের দাবি।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, জেলা প্রশাসকরা ট্রাক না পাঠান না, পুলিশ পাঠান না। তাই রাষ্ট্রীয় ইমার্জেন্সির যে ব্যবস্থা রয়েছে আমরা সেই ব্যবস্থাই অনুসরণ করছি।
খবরের সূত্র : মাছরাঙ্গা টিভি।