করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় ‘সংসদ টেলিভিশনে’ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাদান শুরু করার উদ্যোগ নেয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটুআই প্রকল্পের সহায়তায় এই সম্প্রচার কাজটি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। আর মাধ্যমিকের ক্লাসের রেকর্ডিংয়র জন্য শিক্ষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। শুক্রবার (২৭ মার্চ) ক্লাস রেকর্ডিংয়ে আগ্রহী অভিজ্ঞ শিক্ষকদের তালিকা রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের চিঠি পাঠিয়েছে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
সংসদ টেলিভিশনে’ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সীমিত আকারে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাদান শুরু হবে আগামী ২৯ মার্চ রোববার থেকে। ইতোমধ্যে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত রুটিন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। রাজধানীর কয়েকটি নামকরা স্কুলে শিক্ষকরা খুশীতে ক্লাস রেকডিং করেছেন। জাতির এ ক্রান্তিকালে তারা কোনো সম্মানীও দাবি করেননি। তবুও শুধু ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির লেকচার ভিডিও ধারণের জন্য ১৬ কোটি টাকার বিশাল বাজেট দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এখন ক্লাস রেকর্ডিংয়ে শিক্ষক খোঁজা শুরু হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, মাধ্যমিকের ক্লাসের ভিডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য শিক্ষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। আগ্রহী অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নাম, প্রতিষ্ঠান নাম, পদবী, বিষয়, ফোন নাম্বার ও ইমেইল ঠিকানা উল্লেখ করে ৩০ মার্চের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ইমেইলে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলোর অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের। ২৭ মার্চ এ সংক্রান্ত চিঠি রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় পাঠানো হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে ক্লাস পরিচালনার অভিজ্ঞতা, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া ও ক্যামেরার সামনে ক্লাস নেয়ায় আগ্রহী শিক্ষকদের ভিডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য নির্বাচন করা হবে।
দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ঘরে থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বারবার বলেছেন, ‘বাইরে ঘোরাঘুরির জন্য ছুটি দেয়া হয়নি, বাড়ীতে থাকার জন্য এবং অবশ্যই বাড়ীতে বসে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।’
জানা গেছে, যতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে ততদিনই টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে। দীর্ঘসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে বাসায় অবস্থান করেই ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারে সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সংসদ টেলিভিশনে রেকর্ড করা ক্লাস সম্প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন সাতটি করে প্রতিসপ্তাহে ৩৫টি ক্লাস প্রচার করা হবে। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসেই টেলিভিশনে নিজ নিজ বিষয়ের ওপর অভিজ্ঞ শিক্ষকদের দেয়া শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।