মিলাদের খিচুড়ি খেয়ে পাবনায় মারা গেছে এক স্কুলছাত্রী। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অন্তত ৩০ জন। বগুড়ার গাবতলীতে মিলাদের তবারক খেয়ে অসুস্থ শিশুসহ ৬০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
পাবনার ঘটনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের। ডায়রিয়ায় মারা যাওয়া সুমাইয়া খাতুন সুখী শহীদ আহমেদ রফিক উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ও সেলিম শেখের মেয়ে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রঞ্জন কুমার দত্ত স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গত শুক্রবার ওই গ্রামের মৃত ঈমান আলীর ছেলে শহিদউদ্দিন তার বাবার কুলখানি উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে লোকজনকে খিচুড়ি খাওয়ান।
ওই খিচুড়ি খাওয়ার পর একে একে অসুস্থ হতে থাকে গ্রামবাসী। শুরুতে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও পরদিন শনিবার থেকে ওই গ্রামের প্রায় ৩০ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থদের মধ্যে অন্তত ২৪ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে আনার পথে সুমাইয়া খাতুন সুখী মারা যায়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের চিকিৎসক হাবিবুল ইসলাম বলেন, সুখী যথাসময়ে চিকিৎসা না পাওয়ায় হাসপাতালে আনার পথে মারা গেছে। অসুস্থ রোগীদের মলের নমুনা আইসিডিডিআর-বিতে পাঠিয়েছি।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বলরামপুর গ্রামে এরই মধ্যে একটি স্বাস্থ্য ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে প্রকৃত ঘটনা কী।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, ঘটনাস্থলে জরুরি সেবা নিশ্চিত করার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। ঘটনাটি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করার পর ঢাকার রোগতত্ত্ব ও নিরাময় কেন্দ্রের একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাবনার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
অন্যদিকে বগুড়ার গাবতলীতে অসুস্থদের ভর্তি করা হয়েছে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে। গত শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অসুস্থ লোকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়।
অসুস্থদের স্বজনরা জানান, গাবতলীর দুর্গাহাটা মীরপাড়ার আলেম প্রধানের স্ত্রী বুলি বেওয়া আট মাস আগে মারা যান। কিছুদিন আগে আলেম প্রধান ও তার ছেলে বুলু মিয়াও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ কারণে তার পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার গ্রামের মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মিলাদ মাহফিলে তবারক হিসেবে গরুর মাংস দিয়ে রান্না করা পোলাও বিতরণ করা হয়। অবশিষ্ট পোলাও পাঠানো হয় গ্রামের লোকজনের বাড়িতে।