গ্রফিক নোভেল 'মুজিব’ এর পঞ্চম পর্বের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক ১৪ খণ্ডের বইয়ের প্রথম খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন শেষে প্রধানমন্ত্রী শিশু-কিশোরদের জন্য তৈরি গ্রাফিক নোভেল মুজিবের পঞ্চম পর্বের মোড়ক উন্মোচন করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে নামটি তারা মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তা আজ প্রতিষ্ঠিত। সত্যকে কখনো মুছে ফেলা যায় না, সেটা আজ প্রমাণ হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং তাঁর বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও তাঁর সহযোগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘শুধু বই আকারে নয়, বরং শিশু-কিশোরদের জন্য ও নতুন প্রজন্মের জন্য উপযোগী করে গ্রাফিক নোভেল তৈরি করে এবং সে এমন একটি টিম নিয়ে কাজ করে যারা অত্যন্ত ট্যালেন্টেড বলে আমি মনে করি। এটি অনেক বেশি আমাদের শিশু-কিশোরদের আকর্ষণ করছে। আর এভাবেই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, যে নামটি তারা মুছে ফেলতে চেয়েছিল তা প্রতিষ্ঠার জন্য। সত্যকে কখনো মুছে ফেলা যায় না, সেটা আজ প্রমাণ হয়েছে।’
মুজিব গ্রাফিক নোভেলের পঞ্চম পর্বে দেখা যায়, ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়া সত্যেও শেখ মুজিবুর রহমানকে কিভাবে ছাত্রলীগের পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়, এরপর ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আর কোন নির্বাচন পায়নি ছাত্রলীগ। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের কালোবাজারির কারণে দেশে তৈর অস্থিরতা। তার পরবর্তী সময়ে দেশের কিছু এমএলএ এবং খান বাহাদুরদের স্বার্থের টানাপোড়েনের কারণে ব্রিটিশ গভর্নরের কাছে ক্ষমতা চলে যাওয়া। এ সবকিছু দারুণভাবে নাড়া দেয় তরুণ শেখ মুজিবকে।
এর আগে প্রথম পর্বে খেলাধুলা, পড়াশোনা, ডাক্তারের কাছ থেকে পালানো, প্রথমবারের মতো কারাবরণের মতো বিভিন্ন কৌতূহলোদ্দীপক কাজের পাশাপাশি দেশের প্রতি তরুণ বয়স থেকেই নিজের বিশ্বাসের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিতে দেখা যায় কিশোর শেখ মুজিবকে।
দ্বিতীয় পর্বে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির হাতেখড়ির পাশাপাশি তাঁর প্রেরণা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠার বিষয়টি জানা যায়। মুজিব-৩ এ বঙ্গবন্ধুর স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষের সময় মানবিক ভূমিকার বিষয় উঠে আসে।
মুজিব-৪’ এ অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ সম্মেলন শেষে তরুণ শেখ মুজিবের দিল্লির বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে ছাত্রলীগের সম্মেলনে তাঁর ভূমিকার বিষয়টি উঠে এসেছে।
‘মুজিব-৫’–এর কাজে নিবিড়ভাবে যুক্ত থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রাফিক নভেলটি মূলত ১২ পর্বে তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। ‘মুজিব-১’ প্রকাশিত হয় ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে। এরপর সিরিজের আরও তিনটি বই ‘মুজিব-২’, ‘মুজিব-৩’ ও ‘মুজিব-৪’ প্রকাশিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হলো ‘মুজিব-৫’।
দেশের শিশু-কিশোর এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপনের কাজটি সেভাবে হয়ে ওঠেনি আগে। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবনকে আকর্ষণীয়ভাবে শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরার জন্য গ্রাফিক নভেল বের করার কাজটি শুরু করেন তিনি।
বইটির পঞ্চম পর্বের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি ও বইটির প্রকাশক রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।