প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, ২১ লাখ নিরক্ষরকে সাক্ষরতা দিতে কাজ শুরু হয়েছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। এছাড়া বিদ্যালয়ের বাইরের ১০ লাখ শিশুকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় প্রাথমিক শিক্ষা দেয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এ কার্যক্রমের আওতায় পাইলট প্রকল্পে ১ লাখ শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে বাকি ৯ লাখ শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হবে।
‘বহু ভাষায় সাক্ষরতা উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বর্তমানে মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৬৪ জেলায় নির্বাচিত ২৫০টি উপজেলায় ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নিরক্ষর ব্যক্তিকে সাক্ষরতা জ্ঞান দেয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৩৪টি উপজেলায় শিখন কেন্দ্রের মাধ্যমে ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪১ জনকে সাক্ষরতা জ্ঞান দেয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, দেশের সাক্ষরতা হার ৫৫ ভাগে উন্নীত করায় ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা পুরস্কার’ প্রদান করে। কিন্তু ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি জামাত সরকার ক্ষমতায় এলে নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরতা দেয়ার অনেক কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক প্রকল্প বর্তমান সরকার শুরু করেছে। আর এর মাধ্যমেই আমরা সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করতে পেরেছি।
তিনি জানান, বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে সাক্ষরতার হার ৭৩ দশমিক ৯ ভাগ। এখনো ২৬ দশমিক ১ ভাগ জনগোষ্ঠী নিরক্ষর।
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিশুদের মানসম্মত একীভূত শিক্ষা দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেয়া, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সব শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেয়া, আধুনিক সুবিধা সম্বলিত স্কুল নির্মাণ, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ইত্যাদি কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এছাড়া ওয়ান ডে ওয়ান ওয়ার্ডসহ নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব কর্মষূচির মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাচ্ছে এবং স্কুলগুলোতে শিশু ভর্তির হার বেড়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেনর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক গণশিক্ষা মন্ত্রী ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক তপন কুমার ঘোষ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এফ এম মনজুর কাদিরসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর কর্মকর্তারা।