মুন্সিগঞ্জে শিক্ষক-সংকট, ক্লাস নেন দপ্তরি - Dainikshiksha

মুন্সিগঞ্জে শিক্ষক-সংকট, ক্লাস নেন দপ্তরি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শিক্ষক থাকার কথা আটজন। আছেন মাত্র দুজন। সংকটের কারণে দপ্তরি দিয়ে চলে পাঠদান। একটি কক্ষেই চলে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম। এমন নানা সংকটে জর্জরিত মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরবেহেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বুধবার (৩ এপ্রিল) প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, চরাঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার সুবিধা এমনিতেই অপ্রতুল। এর মধ্যে বিদ্যালয়টি শিশুদের জন্য শিক্ষার সুযোগ নিয়ে এসেছিল। কিন্তু স্কুলটির ওপর দিয়ে নানা সময় বয়ে গেছে ঝড়ঝাপটা। এখন জরাজীর্ণ টিনের একটি ঘরে কোনোমতে টিকে আছে কার্যক্রম। এতে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে চরাঞ্চলের এই বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলটিতে শিশু থেকে পঞ্চম পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণিতে ২৩৭ শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ–সংকটের কারণে দুই পালায় পাঠদান চলছে।

শিক্ষকেরা জানান, ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে চরবেহেরপাড়ায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭৩ সালে এটি সরকারি হয়। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে দুটি কক্ষের পাকা ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় স্কুলটি। তখন সদরের শিলই ইউনিয়নের শিলই এলাকায় টিনের ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে আবার চরবেহেরপাড়ায় টিনের ঘরে স্কুলটি চালু করা হয়। দুই বছর পর স্কুলটি ফের নদীভাঙনের শিকার হয়। এর মধ্যে শিলই ইউনিয়নের দেওয়ানকান্দিতে স্কুল চলে কিছুদিন। সর্বশেষ ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে চরবেহেরপাড়ায় টিনের একটি কক্ষে আবার শুরু হয় স্কুলের কার্যক্রম। টিনের ঘরটি এখন জরাজীর্ণ।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, টিনের বিদ্যালয়টির সামনের মাঠে কয়েকজন শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করছে। ঘরটি পেছনের দিকে কিছুটা হেলে পড়েছে। সামনে এগোতেই চোখে পড়ে বিদ্যালয়ের ভাঙা দরজা-জানালা। জরাজীর্ণ ওই কক্ষ তিনটি অংশে ভাগ করে তিনটি ক্লাস চলে। দুজন শিক্ষক ও স্কুলের দপ্তরি ক্লাস নিচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দুজনের বেঞ্চে কখনো গাদাগাদি করে চারজনকে বসতে হয়। কখনো জায়গার অভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এদিকে এক কক্ষে তিনটি ক্লাস হওয়ায় চেঁচামেচিতে কী পড়ানো হয়, তা-ও ঠিকমতো বোঝা যায় না।

কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, জরাজীর্ণ বিদ্যালয়টি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সানজিদা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য। তাই সব দায়িত্ব তাঁকেই পালন করতে হচ্ছে। তিনি জানান, গত বছর এই বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় ২৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সবাই ভালো ফলাফল করে। সানজিদা আক্তার বলেন, শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ–সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। চেষ্টা থাকলেও ভালোভাবে ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে না। জরাজীর্ণ টিনের বিদ্যালয়টিও ভাঙা। বৃষ্টিতে পানি পড়ে।

সানজিদা আক্তার আরও বলেন, শিক্ষক–সংকটের কারণে তাঁরা দপ্তরি দিয়ে ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জমিদাতা বাদশা মিয়া ঢালী জানান, শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ–সংকটের বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের অবস্থা ভালো না। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসিমা খানম বলেন, ‘বিদ্যালয়টির অবস্থা সম্পর্কে জেনেছি। সরেজমিনেও দেখেছি। নতুন ভবন ও শিক্ষক–সংকটের বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলেছি। আশা করি, শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069930553436279