মেঘনার ভাঙনে উদ্বোধনের আগেই ভাঙতে হলো স্কুল - দৈনিকশিক্ষা

মেঘনার ভাঙনে উদ্বোধনের আগেই ভাঙতে হলো স্কুল

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি |

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন চলছেই। ভাঙনের কবলে পড়ে পাটারীরহাট ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। এরই মধ্যে নদীতীরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন স্কুল ভবন। আর নির্মাণের তিন মাস পরই তা ভাঙনের মুখে পড়ায় লুধুয়া ফলকন ফয়জুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি এখন ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হচ্ছে।

ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল গত জুলাই মাসে। ভবনটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান তো দূরের কথা, এখনও সেটি উদ্বোধনই করতে পারেনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নদীতীরবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ওই স্থানে ভবনটি নির্মাণ করা নিয়ে মতবিরোধ ছিল আগে থেকেই।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরুতে বিদ্যালয়টির সেমিপাকা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। মেসার্স নেহাল ট্রেডার্স ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বরাদ্দে গত বছরের ১৪ জুলাই সাত কক্ষবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। কিন্তু নদীভাঙন কাছাকাছি চলে আসায় নকশা পরিবর্তন করে সাত কক্ষের স্থলে পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত ২১ জুলাই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়।

মেঘনায় ভাঙনে উদ্বোধনের আগেই ভাঙতে হলো ফয়জুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি। ছবি : সংগৃহীত

সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙতে ভাঙতে নদী এখন স্কুল ভবনের মাত্র ৪০ মিটারের মধ্যে চলে এসেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের নিয়োজিত শ্রমিকরা সদ্যনির্মিত ভবনটি ভেঙে ফেলার কাজ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে ওই এলাকায় মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন চলছে। সাত দিনের ভাঙনে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা নদীতে চলে যাওয়ায় সবার মধ্যে এখন ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তারা জানান, নদীর কাছাকাছি ওই স্থানে ভবনটি নির্মাণের বিরোধিতা করেছেন তারা শুরু থেকেই। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর তা বিবেচনায় না নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ওই স্থানে ভবনটি নির্মাণ করেছে। এতে করে ভবনটির নির্মাণ ব্যয় ২৫ লাখ টাকার প্রায় পুরোটাই জলে গেছে।

বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও স্থানীয় পাটারীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, ২০১৬ সালের শেষের দিকে লুধুয়া ফলকন এলাকায় নদীভাঙনের মুখে পড়ে বিদ্যালয়টি বর্তমান জায়গায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু মাত্র চার বছর পর সেটি আবারও ভাঙনের মুখে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গত তিন দিন ধরে ভবনটি ভেঙে মালপত্র স্থানীয় ইসলামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে রাখা হচ্ছে।

সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, ভাঙন খুব কাছাকাছি চলে আসায় উপজেলা শিক্ষা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে ভবনটি ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য জায়গা নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কমলনগর উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ার বলেন, 'ভবন নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানোর সময় বিদ্যালয় থেকে নদীর দূরত্ব অনেক ছিল। কিন্তু গত এক বছর ওই এলাকায় ভাঙনের ভয়াবহতা ছিল খুবই বেশি। এ কারণে নবনির্মিত এ ভবনটি এখন ভেঙে সরিয়ে ফেলতে হচ্ছে।'

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ জানান, ভাঙন ঠেকাতে বিদ্যালয় সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরে আপদকালীন বরাদ্দের আওতায় বালুভর্তি জিও টিউব ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছিল। কিন্তু তীব্র ভাঙনের মুখে তা নদীতে চলে যাওয়ায় ভবনটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042729377746582