মেডিকেল ভর্তিতে নতুন নীতিমালা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া - দৈনিকশিক্ষা

মেডিকেল ভর্তিতে নতুন নীতিমালা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নতুন নীতিমালা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। মন্ত্রণালয় তাদের প্রণীত নীতিমালা ২০১১ পাল্টে নীতিমালা ২০১৭-এ ভর্তির ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম করলে তখন থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

নতুন নীতিমালার ফলে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে এসএসসি ও এইচএসসিতে সর্বমোট ন্যূনতম জিপিএ দরকার ৯। অন্যদিকে নীতিমালা ২০১১ এর ক্ষেত্রে কমপক্ষে জিপিএ ৮ হলেই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যেত।

জিপিএ ৮ থেকে ৯ করায় গত বছরে আট শিক্ষার্থী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর যৌথ বেঞ্চ গত মে মাসে রিটকারীদের পক্ষে রায় দেন। আদেশে বলা হয়, নীতিমালা ২০১৭ এর ২.২ অনুচ্ছেদ অবৈধ। অনুচ্ছেদটিতে ভর্তির ক্ষেত্রে জিপিএ ৯ লাগবে বলে নিয়ম করেছিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বিএমডিসি। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ১৪ আগস্ট স্থগিত করে। চলতি মাসের ২৫ তারিখ এই আপিলের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বিএমডিসি ইতোমধ্যে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য ভর্তির বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আর তাতে এসএসসি ও এইচএসসিতে মোট জিপিএ স্কোর ৯ এর কম পাওয়া শিক্ষার্থীরা মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ পাবেন না। বিজ্ঞান বিভাগের এমন শিক্ষার্থীরা বেকায়দায় পড়েছেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখলে বেকায়দায় পড়া শিক্ষার্থীরা কীভাবে পরীক্ষা দেবেন এবং দিতে পারলেও প্রস্তুতির ঘাটতির কথা বলছেন অনেকে।

এ ছাড়া বাংলাদেশে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মেডিকেল কলেজে পড়তে জিপিএ দরকার ৭ বা সমান নম্বর। দেশি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্র দুই নিয়মকে বৈষম্য হিসেবে দেখছেন অনেকে। অথচ বিদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস পড়ে গিয়ে নিজ দেশে চিকিৎসক নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রথম ধাপেই পাস করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে জিপিএ ৬ বা ৫০ শতাংশ নম্বর হলেই মেডিকেল কলেজে পড়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। আর পাকিস্তানে দরকার হয় জিপিএ ৮ বা ৭০ শতাংশ নম্বর।

গত বছর ভারতে ১৪ লাখ শিক্ষার্থী এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পান। তা থেকে ৮ লাখ জনকে নির্বাচিত করা হয়। আর ১ লাখ ভর্তির সুযোগ পান। এ ছাড়া ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদেরও দরকার হয় জিপিএ ৯। এর ফলে মধ্য সারির ওই মেধাবী শিক্ষার্থীরা চিকিৎসক হতে বিদেশে এমবিবিএস পড়তে চলে যাচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের দেশে শহরে বসবাস করে শিক্ষার্থীরা ভালো কোচিং এবং টিচারের কাছে পড়ার সুযোগ পায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামের তুলনায় শহরের ছেলেমেয়েরা জিপিএ ৯ এর বেশি পায়। দেশের তৃণমূল পর্যায়ে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অনেকে ভালো শিক্ষক বা কোচিং করার সুযোগ পান না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা জিপিএ ৮ পেলে মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় যেন অংশ নিতে পারে এজন্য ৮ শিক্ষার্থী এ রিট করেন। তাতে অধিকসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ হবে। অন্যথায় জিপিএ ৯ হওয়াতে বিদেশে মেধাবীদের চলে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থও চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বঞ্চিত ওই শিক্ষার্থীরা জানায়, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জিপিএ ৮ প্রাপ্তরা যেন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অংশ নিতে পারে এ সুযোগটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

তাদের দাবি, উন্নত স্বাস্থ্যসেবায় বিশ্বের ভারতের সুনাম রয়েছে। তারা যদি ৫০ শতাংশ নম্বর প্রাপ্তদের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়।

এদিকে মেডিকেলের বর্তমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে জিপিএ ৫-এর সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এখন সেই অবস্থা আর নেই। এখন জিপিএ ৫ সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

এখন যদি কম পয়েন্টের শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ পায় তবে প্রতিযোগী সংখ্যা বাড়বে। তবে পয়েন্ট কম থাকার কারণে এমনিতেই সরকারি মেডিকেলে চান্স পাওয়ার সুযোগ কমে যায়। তখন বেসরকারি মেডিকেলের দিকেই মেধা তালিকায় দ্বিতীয় সারির শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তি হন। এখানে বেশি প্রতিযোগী পেলে তাদেরই লাভ বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল হক বলেন, মেডিকেল সেক্টরে আসলে মেধাবীদেরই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। নতুন এ নীতিমালার কারণে প্রথম সারির মেধাবীরাই মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাবেন। তবে মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের জন্য মেধার পাশাপাশি পরিশ্রম করার মানসিকতাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি স্বীকার করেন যে, নতুন নীতিমালার কারণে হয়তো কিছু পরিশ্রমী শিক্ষার্থী মেডিকেল পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। তবে সব মিলিয়ে মেধাবীদেরই এ সেক্টরে আসার পথ সুগম করে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসা বিদ্যায় উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্ত এ চিকিৎসক।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071640014648438