জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পাননি তারাও। বিয়ের এক মাসের মাথায় নিহত হন সুলতানা ও রোজী।
সুলতানা খুকু। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের এক সাড়াজাগানো নাম। নিজ ইভেন্টে বরাবরই চ্যাম্পিয়ন এই কৃতি ক্রীড়াবিদের সঙ্গেই পঁচাত্তরের ১৪ জুলাই বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু এক মাস পরেই নেমে আসে ঘোর অমানিশা। ১৫ আগস্ট ভোর রাতের বর্বরতায় পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে নির্মম মৃত্যুবরণ করেন বঙ্গবন্ধুর অতিপ্রিয় এই পুত্রবধূ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে এমএ পরীক্ষা দিয়েছিলেন সুলতানা কামাল। শৈশব থেকেই নানা খেলাধুলায় প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছিলেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক ক্রীড়ায় চ্যাম্পিয়ন হন লংজাম্পে। ১৯৬৬ ও ৬৮ খ্রিষ্টাব্দে জিতে নেন স্বর্ণপদক। ১৯৬৯-৭০ খ্রিষ্টাব্দেও জাতীয় ক্রীড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করে স্বর্ণপদক জেতেন। আর ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে রেকর্ড করেন নিখিল পাকিস্তান নারী অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায়। এ রকম বহু সাফল্য লেখা আছে সুলতানার নামের পাশে।
বঙ্গবন্ধুর ছোট বোন খোদেজা হোসেনের মেয়ে ছিলেন রোজী। শেখ কামালের বিয়ের দুদিন পর শেখ জামালের বিয়ে হয় রোজীর সঙ্গে। তার বাবা সৈয়দ হোসেন ছিলেন সংস্থাপন সচিব। রোজী সবে তখন বদরুন্নেসা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। মাধ্যমিক পাস করেন ধানমণ্ডি গার্লস স্কুল থেকে। ঘাতকরা কেড়ে নেয় তার জীবনটাও।
১৫ আগস্ট রাতে গুলির শব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন শেখ জামাল ও রোজী। তাদের পাশে এসে দাঁড়ান সুলতানা কামাল। গুলি চালিয়ে তিনজনকে একই সময়ে হত্যা করে ঘাতকেরা।