কক্সবাজারের রামু উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ের প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আব্দুল জলিল (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে একমাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আব্দুল জলিল জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের পূর্বনোনাছড়ি গ্রামের মৃত সোলতান আহম্মদের ছেলে। জলিল পেশায় দিনমজুর।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রণয় চাকমা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাকে একমাসের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করাসহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেন ইউএনও।
জানা যায়, সোমবার (৩ ফেব্রয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষা অংশ নেবেন ওই শিক্ষার্থী। কিন্তু মেয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুক তা চান না আব্দুল জলিল। তাই পরীক্ষায় অংশ ঠেকাতে মেয়ের প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছিনিয়ে নেন তিনি।
ওই ছাত্রীর মা জানান, পারিবারিক অশান্তির কারণে পাঁচ বছর আগে আব্দুল জলিলের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। তাদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। এরমধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে বাবার সঙ্গে থাকে, আর বাকি তিন সন্তান তার সঙ্গে মামার বাড়িতে থাকে।
তিনি জানান, বিচ্ছেদের পরেও জলিল তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) জোয়ারিয়ানালা মাদরাসা গেইট বাজার থেকে কেনাকাটা ও প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে ভয় দেখিয়ে মেয়ের প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড, জামা-কাপড়, বিকাশ থেকে উঠানো করা ২০ হাজার টাকা, মোবাইলসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। পরে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে তার হস্তক্ষেপে কাপড়-চোপড় ফেরত দিলেও প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ফেরত দেননি। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ইউএনওকে অবহিত করা হলে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেন।
তিনি আরও জানান, বিচ্ছেদের কারণে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন জলিল। তিনি চান না সন্তানেরা শিক্ষিত হউক।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রণয় চাকমা জানান, একজন শিক্ষার্থী সারা বছর প্রস্তুতি নেওয়ার পর পরীক্ষায় অংশ নিতে না পাড়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের অপরাধ যাতে কেউ না করে সেজন্যই জলিলকে একমাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক কারণে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়েই জলিল এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানান ইউএনও।