যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বিপুল প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার আয়োজিত মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে একদল ছাত্রলীগকর্মী। এ পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মশিয়ুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে আছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্বেও আছেন। আর আনোয়ার হোসেন বিপুল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ড. জাহিদকে ‘প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে’ গতকাল দুপুরে মানববন্ধন আয়োজন করে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় শেখ হাসিনা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমাইয়ারা আজমীরা এরিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। ওই মিছিল থেকে অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদের অপসারণ দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। একপর্যায়ে শিক্ষকদের মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সময় পুলিশি নিরাপত্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়। পরে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ‘গত ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বিপুল মোবাইল ফোনে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। সম্প্রতি শহীদ মশিয়ুর রহমান হলে নিম্নমানের চেয়ার ও টেবিল সরবরাহ করা হয়েছে। বিলে আমি আপত্তি করেছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী পোড়ানোর কথা বলে তাঁরা ইস্যু তৈরি করতে চাইছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বিপুল দাবি করেন, ‘তিনি কোনো টেন্ডার দাখিল ও চেয়ার-টেবিল সরবরাহ করেননি। অধ্যাপক ইকবাল কবীরের নেতৃত্বে ক্যাম্পাস থেকে নৌকার নির্বাচনী সামগ্রী সরানো হয়েছে। আমি তার প্রতিবাদ করেছি মাত্র।’
ছাত্রলীগ নেত্রী হুমাইয়ারা আজমীরা এরিন বলেন, ক্যাম্পাসে নৌকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে অপসারণ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন ছাত্রলীগ নেত্রীর নেতৃত্বে যা ঘটেছে সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আনোয়ার হোসেন বিপুল নামের ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় অধ্যাপক ইকবালকে হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক।