যশোর বোর্ডের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আলীমকে প্রেষণ প্রত্যাহার করে ওএসডি করা হয়েছে। যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন ড. মোল্লা আমির হোসেন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই দুদকের একটি দুদকের একটি দল নানা অভিযোগ তদন্তে যশোর বোর্ডে আনাগোনা করছিল। তবে, কি বিষয়ে এ তদন্ত চলছিল তা নিয়ে সৃষ্ট হয় ধোঁয়াশা। এরপরই অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আলীমকে ওএসডি করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে ছিল নানা অভিযোগ। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাস থেকে তিনি যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। বোর্ড চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ ওঠে গতবছরের মাঝামাঝি। অভিযোগে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দরপত্র ছাড়াই ২ কোটি ২৬ লাখ টাকার কম্পিউটার সামগ্রী কিনেছে। কেনাকাটায় সরকারের ক্রয়বিধি উপেক্ষা করায় স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা দল আপত্তি দিয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ক্যাশ বই, খরচের বিবরণী ও বিল-ভাউচার নিরীক্ষা করে দেখেছেন রাজস্ব অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা দল। নিরীক্ষা দলের মতে, উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি এড়িয়ে অনিয়মিতভাবে কোটেশন প্রদানের অনুরোধসংবলিত বিজ্ঞপ্তি (আরএফকিউ) অনুসরণ করে কম্পিউটার সামগ্রী কেনা হয়েছে। এর মূল্য ২ কোটি ২৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষমতা (অনুন্নয়ন) সংশোধন আদেশ উপেক্ষা করা হয়েছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্তীত্বহীন প্রতিষ্ঠান থেকে এসব পণ্য কেনা হয়। আর যেসব প্রতিষ্ঠানের প্যাডে বিল ভাউচার জমা দেয়া হয়েছে তারা বিল বা কেনাকাটা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
অভিযোগ আছে, চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল আলীম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে বোর্ডের বিভিন্ন শাখায় ৪৫ জন মাস্টাররোল কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। বোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের কয়েক নেতার যোগসাজসে প্রত্যেকের কাছ থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা হারে ঘুষ নিয়ে তাদের অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ মাস্টাররোল এসব কর্মচারী নিয়োগের আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নেয়ার প্রয়োজন থাকলেও বোর্ডের চেয়ারম্যান তা অমান্য করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
কেনাকাটায় অনিয়মের বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল আলীম গণমাধ্যমকে বলেন, বোর্ডের পরীক্ষার কাজে ব্যবহারের জন্য ওই মালামাল কেনা হয়েছে। অনেক সময় দরপত্রের মাধ্যমে কিনতে বেশি সময় লাগে। তাই জরুরি প্রয়োজনে কোটেশনের মাধ্যমে সেগুলো সংগ্রহ করে চাহিদা মেটানো হয়েছে।