যা জানাটা খুব জরুরি - দৈনিকশিক্ষা

যা জানাটা খুব জরুরি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আমরা প্রায়ই হঠাৎ কোনো না কোনো কারণে জেনে অথবা না জেনে ছোটোখাটো দুর্ঘটনা বা আঘাতপ্রাপ্ত হই। হঠাৎ পাওয়া এই আঘাতগুলো আমাদের প্রায়ই অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। এমনকি উপযুক্ত জ্ঞান ও সচেতনতার অভাবে অবস্থা আরো শোচনীয় করে তোলে। আমরা সবাই জানি যে সারাবিশ্বে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের কারণে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র পর্যায়ের দুর্ঘটনা ও অসুস্থতার সংখ্যা বেড়ে চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানমতে, সাম্প্রতিককালে প্রতি বছর সারাবিশ্বে প্রায় ৬ কোটি লোক মৃত্যুবরণ করছে, যার ১০ শতাংশ, অর্থাৎ ৬০ লাখ লোক কোনো না কোনো শারীরিক আঘাতের কারণে মারা যায় এবং বিপুলসংখ্যক লোক পঙ্গুত্ব বরণ করে। গবেষণায় এবং অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে সব ধরনের দুর্ঘটনা ও অসুস্থতায় যদি যথাসময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা যায়, তাহলে বহু মানুষের মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই প্রাথমিক চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, প্রাথমিক চিকিৎসা বলতে আসলে কী বুঝায়? হঠাৎ দুর্ঘটনায় আহত বা অসুস্থ ব্যক্তিকে ডাক্তার বা হাসপাতালে পাঠানোর আগে তাৎক্ষণিকভাবে যে সেবা দেয়া হয়, তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বলে। যিনি প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন, তাকে প্রাথমিক চিকিৎসক বলা হয়। আমরা ডাক্তারের কাছে নেওয়ার আগে অনেকভাবে রোগীকে সেবা প্রদান করতে পারি, কিন্তু মজার কথা, আমরা নিজেরাই জানি না কতভাবে তাৎক্ষণিক সেবা দেয়া যায়। এমনকি আমাদের মধ্যে কিছু কুসংস্কার ও সঠিক জ্ঞানের অভাবে রোগীর অবস্থা আরও তিরোহিত হয়। যেমন কবিরাজ, ঝাঁড়ফুঁক অথবা ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি। আবার অনেকের কাছে সামান্য হাত কেটে গেলে জীবাণু পরিষ্কার করার মতো স্যাবলনও থাকে না। কিছু হলেই ডাক্তারের কাছে ছোটে। এতে রোগী আরো ঘাবড়ে যায়। কারণ রোগীর কাছে ঐ সময়ের তাৎক্ষণিক সেবাটা জীবন বাঁচানোর জন্য খুব সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ প্রাথমিক চিকিৎসার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আহত বা অসুস্থ ব্যক্তির জীবন বাঁচাতে সাহায্য করা, অবস্থার অবনতি রোধ করা, অবস্থার উন্নতি করা।

আমাদের অনেকের প্রশ্ন, কখন প্রাথমিক চিকিত্সা দেব? আঘাত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সা দিলেই রোগী সবচেয়ে বেশি আরাম পাবে। তবে এক্ষেত্রে যিনি চিকিত্সা দেবেন, অবশ্যই মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হবে এবং নিজেকে ডাক্তার ভাবা যাবে না। প্রাথমিক চিকিৎসককে অবশ্যই সঠিক ধারণা নিয়ে চিকিত্সাসেবা দিতে হবে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখতে হবে ঠিক আছে কি না এবং পরে পা থেকে মাথা পর্যন্ত সমস্ত শরীর ভালো করে দেখে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। মোটামোটিভাবে সারাবিশ্বে প্রায় একই রকমভাবে প্রাথমিক সেবা দেয়া হয়। এটা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। প্রাথমিক চিকিৎসার ক্ষেত্র অনেক বিস্তর। তবে আমাদের জানার ক্ষেত্রটা খুব অল্প। হঠাৎ দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকূল না-ই থাকতে পারে। এমনকি হাতের কাছে ডাক্তার না-ও পেতে পারে। আর তখনই প্রাথমিক চিকিৎসাটা খুব বেশি দরকার হয়ে পড়ে। এভাবে আমরা চোকিং (গলায় খাদ্যকণা বা কিছু আটকে যাওয়া), হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসে পুনঃসঞ্চালন পদ্ধতি (সিপিআর- হার্টঅ্যাটাক), যা শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন নিতে কারো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক দিলে খুবই উপকার পাওয়া যায় এবং রোগীকে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া শক, রক্তক্ষরণ, ছোটোখাটো ক্ষত, dressing, মচকানো, ব্যান্ডেজ, পোড়া, রাসায়নিক পোড়া, বৈদ্যুতিক পোড়া, ফিট, অজ্ঞান হওয়া, মূর্ছা যাওয়া, বিষক্রিয়া, হাড় ভাঙা, পানিতে ডোবা, মনস্তাত্ত্বিক আঘাতপ্রাপ্ত রোগীকে তাৎক্ষণিক সেবা দিতে পারি। আমরা যদি নিজেরা প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করি, তাহলে অকাল করুণ অবস্থা থেকে যে কেউ বাঁচতে পারবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন first Aid Training Programme এবং বিভিন্ন সামাজিক সেচ্ছাসেবী সংগঠনে জোরালোভাবে প্রাথমিক চিকিত্সা শিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে সেচ্ছাসেবীমূলক সংগঠন যেমন স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। মনে রাখবেন, আপনার এই তাত্ক্ষণিক সেবাই হয়তো রোগীকে চরম বিপজ্জনক অবস্থা থেকে বাঁচাতে পারে। রোগীটি হতেই পারে আমার পরিবারের কেউ, আমার সমাজের কেউ, আমার দেশের কেউ; একটু সেবা পাওয়ার অধিকার সবারই আছে। মানবধর্ম সেবা করা। তাই আমাদের প্রত্যেকের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা উচিত। এমনকি প্রত্যেকের কাছে একটি করে ফার্স্ট এইড নড়ি থাকা উচিত।

সোনিয়া আক্তার পুষ্প : শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004392147064209