যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল : যেদিন প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন সেদিনই নিয়োগ - দৈনিকশিক্ষা

যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল : যেদিন প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন সেদিনই নিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়মবহির্ভূতভাবে স্কুলের পরিচালনা কমিটি (জিবি) গঠন এবং ওই কমিটির মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে একই ব্যক্তিকে প্রথমে সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনি যেদিন আবেদন করেছেন সেদিনই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হলেও তিনি নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে পরিচয় দেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের কপি দৈনিক শিক্ষার হাতে রয়েছে।

অনিয়মের দায়ে প্রতিষ্ঠানটির জিবি ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির জিবি সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ শাখার কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একটি আন্তঃবিভাগীয় কমিটি প্রতিষ্ঠানটিতে তদন্ত করে। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে জিবি সদস্য নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে বলে বেরিয়ে এসেছে। এর ভিত্তিতে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সাতদিনের মধ্যে জবাব জানাতে হবে।

কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দুটি নোটিশের একটিতে নির্বাচন সংক্রান্ত জালিয়াতির তথ্য ৯টি পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যথাযথ বিধি অনুসরণ না করে, কোনো নির্বাচনী আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই (নির্বাচনী) প্রক্রিয়ার সব ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে- নির্বাচনী তফসিল, বৈধ প্রার্থী তালিকা, নির্বাচনে বিজয়ী সদস্যদের তালিকা ও নির্বাচিত সদস্যদের ফলাফল বিবরণ রয়েছে। এসব কাগজ তৈরিতে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, যে তারিখে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে সেই তারিখেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ৯৮ অভিভাবককে ভোটার করা হয়নি। ৬৯ ভোটারের তথ্য ত্রুটিযুক্ত। ভোটার ক্রমিকে সিরিয়াল পর্যবেক্ষণে ৪৪টি ভোটার বাদ পড়েছে। ৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ত্রুটিযুক্ত যা বাতিলযোগ্য। ভোটার তালিকায় একই শ্রেণি ও শাখার অভিন্ন রোল নম্বর একাধিকার ব্যবহার করা হয়েছে। অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ও মোট ভোটারের সংখ্যা অভিন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তদন্তে তা পাওয়া যায়নি। মোট শিক্ষার্থী ৩৭৭৮ জন আর ভোটার ৩৬৪১ জন। বোর্ডের বিধিমালা অনুযায়ী, প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল বিবরণী তৈরি ও প্রকাশ করবেন। কিন্তু তা করা হয়নি।

নোটিশে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটিতে সর্বশেষ কর্মরত প্রধান শিক্ষক আবু ইউসুফের চাকরি ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট শেষ হয়। বিধি মোতাবেক প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জিবি একজন সহকারী শিক্ষককে প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক আছেন সেগুলোতে তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ দিতে বোর্ড ২০১৯ সালের ৫ মার্চ নির্দেশ দেয়। এ ক্ষেত্রে সেটাও প্রতিপালন করা হয়নি।

অপর শোকজ নোটিশে বলা হয়, মনিরুজ্জামান হাওলাদার নিজের প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের আবেদন করলেও বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেননি। আবার যে তারিখে তিনি আবেদন করেন সেই তারিখেই তাকে তড়িঘড়ি সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ আবেদনে এই নিয়োগ যথাযথ হয়নি। এছাড়া অবৈধ জিবির সুপারিশে সহকারী শিক্ষক থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগদানও অবৈধ।

উল্লেখ্য, সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ আছে। এ নিয়ে তদন্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ)। এ প্রতিবেদনের আলোকে বোর্ডের নির্দেশে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। অবশ্য তহবিল থেকে চলে যাওয়া অর্থ আদায়ে প্রতিষ্ঠানটি রহস্যজনক কারণে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ইউসুফের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে বলেও জানা যায়। 

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0091500282287598